সম্মেলন ঘিরে সাজানো হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। নির্মাণ করা হয়েছে বর্ণাঢ্য ও সুবিশাল নৌকার আদলে প্যান্ডেল।
Published : 06 Dec 2022, 12:39 PM
ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন ঘিরে নেতৃত্ব পাওয়ার আশায় মনোয়নয়নপত্র জমা দিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিটের ৮৪০ জন নেতা।
তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ২৫৫ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে ২৪৫ জন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে ৩৪০টি আবেদন জমা পড়েছে।
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা সোয়া ১১টায় পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর এ সম্মেলনে অংশ নিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন। ‘সাংগঠনিক নেত্রী’ শেখ হাসিনাই ছাত্রলীগের পরবর্তী শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করে দেবেন বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।
সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের আবেদনপত্র নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই নতুন কমিটি হবে।”
এর আগে ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমাবেশ হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বার্ষিক সম্মেলন হয়।
সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে একসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটিও ঘোষণা করে হবে। তবে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের দিনই কমিটি ঘোষণা করা হবে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জন্য গঠিত প্রধান কমিশনার ছাত্রলীগ সহসভাপতি রেজাউল করিম সুমন বলেন, “আমরা ১ থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নিয়েছি। কেন্দ্রীয় কমিটির জন্য ২৫৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৯৬টি আর সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৯টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছে।
৫ জন নারী নেত্রী ছাত্রলীগের শীর্ষ পদের জন্য মনোনয়নপত্র নিয়ে তাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন বলে জানান সুমন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শীর্ষ পদের জন্য মোট ২৪৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এ কমিটির জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আলাদা পদে মনোনয়নপত্র জমা না নিয়ে একসঙ্গে দুই পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি রায়হান কাওসার।
দুই মহানগরের শীর্ষ পদের জন্য মনোনয়নপত্র বিক্রি হয় গত ২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর। প্রতিটি মনোনয়নপত্রের দাম ছিল ৫ হাজার টাকা। মহানগর উত্তরের শীর্ষ পদের জন্য মনোনয়নপত্র বিক্রি হয় মোট ১৮৭টি।
ঢাকা মহানগর উত্তরের বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, সভাপতি পদে ১০২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৮৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উভয় পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জন্য বিক্রি হয়েছে ১৮২টি মনোনয়নপত্র। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ পদে ১৮২টি মনোনয়ন সংগ্রহ করা হলেও সভাপতি পদে ৮৩টি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৭০টি মনোনয়নপত্র ওপর মহলে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি আলিমুল হক।
২০১৮ সালে ছাত্রলীগের সর্বশেষ ২৯তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক হন গোলাম রাব্বানী। তবে মাত্র এক বছরের মাথায় অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে তাঁদের নেতৃত্ব থেকে অপসারণ করা হয়। এর পর দায়িত্ব পান বর্তমান সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
পায়রা উড়িয়ে ছাত্রলীগের সম্মেলন উদ্বোধন
ছাত্রলীগের সম্মেলন ঘিরে মুখরিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান