ছাত্রলীগ থেকে ‘বিষফোঁড়া’ বের করে দিতে হবে: কাদের

“অনেক দিনের গলিত পচা জিনিস এখনও রয়ে গেছে। এই পচা গলিত অংশ বাদ দিতে হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2023, 03:19 PM
Updated : 22 March 2023, 03:19 PM

ছাত্রলীগের মধ্যে অপকর্মকারীদের ‘বিষফোঁড়া’ আখ্যায়িত করে সংগঠন থেকে তাদের বের করে দিতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির মিলনায়তনে বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

ছাত্রলীগের এক সময়ের সভাপতি কাদের বলেন, “ছাত্রলীগে মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটে, প্রাক্তন ছাত্রলীগ হিসেবে আমাদের লজ্জা লাগে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অপকর্মে জড়িত ছেলে মেয়েদের আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই।

“কোথাও কোথাও অনেকে লাগাম ছাড়া হয়ে গেছে। এদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। কোনো আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। সততা ও মেধার শক্তি বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা, শেখ হাসিনার শিক্ষা। সততা ও মেধার সংমিশ্রণে স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা স্মার্ট কর্মী গড়ে তুলতে চাই।”

সংগঠনটি বর্তমান নেতাদের উদ্দেশে কাদের বলেন, “অপকর্মের সাথে জড়িত কাউকে নেতা বানানো যাবে না। সার্জারি করে ছাত্রলীগ থেকে বিষফোঁড়া বের করে দিতে হবে। অনেক দিনের গলিত পচা জিনিস এখনও রয়ে গেছে। এই পচা গলিত অংশ বাদ দিতে হবে। যাদের সন্ত্রাসী মানসিকতা, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য ও মাদকের মানসিকতা, তাদের পরিহার করতে হবে।”

অপকর্মকারীদের স্থায়ী বহিষ্কারের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “ছাত্রলীগের নামে যারা অপকর্ম করে, তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। কয়দিন পরে আবার বহিষ্কার আদেশ উঠিয়ে নেওয়া হয়। এদের শাস্তি স্থায়ীভাবে দিতে হবে, সাময়িক নয়।

“শুধু সাংগঠনিক অ্যাকশন নয়, প্রশাসনিক অ্যাকশনও ওদের বিরুদ্ধে নিতে হবে, জেলে পাঠাতে হবে।”

বর্তমানে আংশিক কমিটিকে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ করতে ছাত্রলীগ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান কাদের।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপির একটা কনস্টিটিউশন আছে। সেই কনস্টিটিউশনে কোথায় আছে ১২ বছর ধরে মহাসচিব থাকা যাবে? সে যে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে, তার নিজেরই তো পদত্যাগ করা উচিত। কারণ বিএনপির কনস্টিটিউটশন অনুযায়ী সে তো অবৈধ।”

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের ‘ভূত’ মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

কাদের বলেন, “আজকে আমরা আমেরিকার অ্যাম্বাসেডরকে বলে এসেছি, ইট ইজ নট পসিবল টু রিটার্ন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট এগেইন। তত্ত্ববধায়ক সরকারে বাংলাদেশ আর ফেরত যাবে না।”

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপির আন্দোলন এসে গেছে নীরব পদযাত্রায়। পদযাত্রা থেকে দাঁড়িয়ে গেছে মানববন্ধনে। এখন বিএনপির আন্দোলন চোরাবালিতে আটকে গেছে। সামনেও যায় না। পিছনেও যায় না। ডানেও যায় না। বামেও যায় না।

“শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের কাদায় পড়া গরুর গাড়ি নিয়ে একটা চিত্রকর্ম আছে। বিএনপি অবস্থা কাদায় আটকে পড়া জয়নুলের গরুর গাড়ির মতোই। নড়েও না, চড়েও না।”

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ফখরুল নাকি বলে আমরা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছি। ভুয়া ভোটার তালিকা করে প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে তোমরা গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছ। বিএনপির হাতে এই দেশ আর যাবে না। এই দেশ মেরামত করেছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা তাদের হাতে এই বাংলাকে ফিরিয়ে দেবে না।”

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য তারানা হালিমও বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।