লাঠি নিয়ে মাঠে এলে ‘খবর’ আছে: বিএনপিকে কাদের

নিজ দলের জনপ্রতিনিধিদেরও সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2022, 01:17 PM
Updated : 29 Sept 2022, 01:17 PM

রাজনৈতিক কর্মসূচিতে লাঠি নিয়ে এলে ‘খবর’ আছে বলে বিএনপিকে সতর্ক করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, “আসেন মাঠে আসেন। লাঠি নিয়ে আসলে খবর আছে। জাতীয় পতাকার সাথে লাঠি, এটা আমরা মেনে নিতে পারবো না। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা আমরা মেনে নেব না।”

বৃহস্পতিবার ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন কাদের।

বিএনপির আন্দোলনের হাঁকডাকে আওয়ামী লীগ ‘ভীত’ এই ‘উদ্ভট’ চিন্তা দেশের মানুষের মাথায় নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কাদের আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থায় আছে, সক্রিয় আছে। সতর্ক অবস্থায় সংযমী হয়ে আমরা থাকব, রাজপথে ছিলাম, আছি। আন্দোলনের ভয় আওয়ামী লীগকে দেখাবেন না।”

বিএনপির আন্দোলনের হুমকির জবাবে তিনি বলেন, “তারা (বিএনপি) বিভাগীয় সমাবেশ করবে, আবার ডিসেম্বরে অবরোধ। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছে, আগের অবরোধ তোলে নাই, এখন আবার অবরোধ!

“আমি বললাম আগের অবরোধ প্রত্যাহার না করে নতুন করে আবার অবরোধ কেন-এটা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রশ্ন করেন, তিনি কেন এটা করতে যাচ্ছেন? কতবার তো গণআন্দোলন করলেন। ১৩ বছর চলে গেল। রোজার ঈদ, কোরবানির ঈদ, পরীক্ষার পর, বর্ষার পর...এই এত বছরে কতবার যে আন্দোলনের ডাক। দেখতে দেখতে ১৩ বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর?”

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে নির্বাচনে আসতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “ফখরুল সাহেব, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভুত মাথা থেকে নামান। সোজা কথা, সোজা পথে আসুন, নির্বাচনে আসুন। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।”

নির্বাচনকালে সরকারের কর্মপদ্ধতি নিয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “সরকার রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন করবে। সরকারের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাও নির্বাচন কমিশনের অধীনে।”

“সরকার না থাকলে কারা চালাবে দেশ? আপনাদের হাতে দেব?” বিএনপির উদ্দেশে বলেন তিনি।

‘অপকর্মের সব তথ্য নেত্রীর হাতে’

আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্যে নিজ দলের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের।

তিনি বলেন, “যারা যেখানে অপকর্ম করছেন, সব তথ্য কিন্তু নেত্রীর কাছে আছে। সবার এসিআর আছে। সময়মতো টের পাবেন। কেউ কেউ টের পাচ্ছেন, বাকিরা সামনে পাবেন।”

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে ‘জমিদারি’ করার চর্চা কিংবা মানসিকতা শেখ হাসিনা কখনওই ক্ষমা করবেন না জানান তিনি।

অপকর্ম করে সরকারকে বিব্রত করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুমকি দেন কাদের।  

“পরিষ্কার বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের পরিচয়ে যারাই অপকর্ম করবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপকর্মকারীদের জন্য সাফল্য ম্লান হতে পারে না।“

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ আখ্যা দিয়ে দেশের অবকাঠামোসহ সার্বিক বিষয়ে অভূতপূর্ব উন্নয়নে তার দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের প্রশংসা করেন ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেন, “একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই দেশে আজ উন্নয়নের জোয়ার বইছে।”

পরে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে কেক কাটেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে এদিন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশুদের অভিভাবকদের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন ওবায়দুল কাদের।  

স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাহুল হক সাচ্চুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লাকী ইনাম, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সাইফুদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।