রোববার সপ্তম দফা অবরোধের সকালে ঢাকায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে সঙ্গে করে ঝটিকা মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামেন রিজভী।
Published : 26 Nov 2023, 09:48 AM
সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ‘গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে’ অবরোধ কর্মসূচি চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার সপ্তম দফা অবরোধের প্রথম দিন সকালে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে সঙ্গে করে ঝটিকা মিছিল নিয়ে ঢাকার রাস্তায় নামেন রিজভী। মিছিল শেষে বনানীর কামাল আতার্তুক এভিনিউতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
দেশব্যাপী সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের ৪৮ ঘণ্টার এই নতুন কর্মসূচি রোববার ভোর থেকে শুরু হয়েছে, যা শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর থেকে বিএনপি দুই দফায় তিনদিন হরতাল এবং ৬ দফায় মোট ১৩ দিন অবরোধ করেছে। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে করা বিএনপির এই আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে আসছে দলটির দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলো।
রিজভীর নেতৃত্বের ওই মিছিলে ‘অবৈধ তফসিল মানি না, মানব না’, ‘আজকের অবরোধে সফল হোক সফল হোক’, ‘জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই করো’– ইত্যাদি শ্লোগান দেন নেতাকর্মীর।
বনানীর কামাল আতার্তুক এভিনিউ মোড় থেকে শুরু করে বনানী মাঠের কাছে এসে মিছিলটি শেষ হয়। ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, কেন্দ্রীয় সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাননসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মিছিলে অংশ নেন।
মিছিল শেষে কামাল আতার্তুক এভিনিউয়ের ফুটপাত থেকে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “এই অবরোধ হচ্ছে গণতন্ত্র ফেরানো অবরোধ, এই অবরোধ হচ্ছে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার অবরোধ, এই অবরোধ হচ্ছে জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফেরত দেওয়ার অবরোধ। আমাদের এই কর্মসূচি হচ্ছে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। এই কর্মসূচি চলবে।”
‘গণবিচ্ছিন্ন সরকার অন্ধকার দেখছে’ দাবি করে রিজভী আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে ‘দেউলিয়া’ হয়ে যাওয়া একটি দল হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, “এখন ভোটে তারা (আওয়ামী লীগ) সঙ্গী খুঁজে বেড়াচ্ছে। কোথাও সঙ্গী না পেয়ে গোয়েন্দাদের দিয়ে দলছুট কিছু নেতা ভাগানোর চেষ্টা করছে। কিংস-ভুঁইফোড় পার্টি করছে… কিন্তু কোনো কিছুতে তারা হালে পানি পাচ্ছে না,” বলেন রিজভী।
বিএনপির এই নেতার ভাষ্য, “হালুয়া-রুটির ভাগ পেতে যে কজন দলছুটকে পেয়েছে আওয়ামী লীগ, তৃণমূল, জনগণ তাদের প্রত্যাখান করেছে।”
প্রতিবেশী দেশ ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ভারত সরকার ও তাদের ক্ষমতাসীনদের বোঝা উচিত বাংলাদেশের জনগণ কেনো তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। সরকারকে উলঙ্গভাবে, অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে তারা (ভারত) বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।”
রিজভী বলেন, বনানী ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিএনপিসহ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সকালে রাস্তায় নেমেছে।
রিজভীর বক্তব্যের পর নেতা-কর্মীরা ফুটপাতে কিছুক্ষণ অবস্থান নেওয়ার পর সেখান থেকে চলে যান।
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে সকাল ৭টায় হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজার সামনের সড়কে ঝটিকা মিছিল বের হয়, যা শেষ হয় পরীবাগে।
২০ থেকে ২৫ জন নেতা-কর্মীর ওই মিছিলে তফসিল বাতিলের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়।