বিজয় দিবসে বিএনপির প্রত্যাশা, দেশে ‘গণতন্ত্র ফিরবে’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আজকের এই বিজয়ের দিনে আমরা আশা করি, প্রত্যাশা করি, বাংলাদেশ থেকে স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদী সরকারের অবসান হবে।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2022, 09:21 AM
Updated : 16 Dec 2022, 09:21 AM

দেশে ‘গণতন্ত্র ফেরাতে’ জণগণকে সঙ্গে নিয়ে ‘যুগপৎ আন্দোলনে’ রাজপথে নামার প্রত্যয় জানিয়েছেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিজয় দিবসের সকালে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

মোশাররফ বলেন, “আজকের এই বিজয়ের দিনে আমরা আশা করি, প্রত্যাশা করি, বাংলাদেশ থেকে স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদী সরকারের অবসান হবে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি এখন সরকার পতনের ডাক দিচ্ছে। এর মধ্যে রাজধানীর গোলাপবাগে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ থেকে ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। বিএনপির সঙ্গে ‘যুগপৎ আন্দোলনে’ নামার ঘোষণা দিয়েছে সাত রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।

মোশাররফ বলেন, “সেই লক্ষ্যে আমরা সকলে কাজ করছি। আমাদের দলের ঘোষিত ১০ দফার সাথে যারা একমত পোষণ করেছে তারাও ভবিষ্যতে যুগপৎভাবে আন্দোলন অংশগ্রহন করবে। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এর ফয়সালা ইনশাল্লাহ রাজপথে করব।”

সরকারের উদ্দেশে মোশাররফ বলেন, “আমি ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল গণতন্ত্র, যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলো অর্থনৈতিক সাম্য, সামাজিক ন্যায়-বিচার এবং দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছর পর আমাদেরকে বলতে হচ্ছে যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে… তাদের লুটপাট, চাঁদাবাজি, দুর্নীতির কারণে দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছে।”

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “বিজয়ের এই দিনে আমরা স্মরণ করছি… মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন করে এই দেশকে যারা স্বাধীন করেছে, আমি তাদের সকলকে স্মরণ করছি।”

বিএনপি জঙ্গিবাদের ‘পৃষ্ঠপোষক’– আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে মোশাররফ বলেন, “এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করছে, বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাস বিকৃত করছে। তারা…। জনগণ বিচার করবে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) সঠিক না জনগণ সঠিক।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সিরাজউদ্দিন আহমেদ, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া আবদুস সালাম আজাদ, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরাফত আলী সপু, মীর নেওয়াজ আলী, আফরোজা আব্বাস, শাম্মী আখতার, নিলোফার চৌধুরী মনি,  ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, শহীদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গনি চৌধুরী, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তারা বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।

এর আগে সকাল ৯টায় খন্দকার মোশাররফের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা।

বিজয় দিবসে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রা করার কথা রয়েছে দলটির।