আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূলে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করার এবং ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগের প্রাণ হচ্ছে তৃণমূল। যে তৃণমূল পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ, তাকে হারানোর শক্তি কারও নাই। যেখানে আওয়ামী লীগ হারবে, মনে করতে হবে সেখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেনি। নিজেরা নিজেদের বিরোধিতা করেছে।”
রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সভায় বক্তৃতা করছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
দেশের উন্নয়ন পরিক্রমা তুলে ধরে তিনি বলেন, “গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হয়েছে এবং প্রত্যেকটি মানুষের ভাগ্যের যেভাবে উন্নয়ন হয়েছে; যে যেভাবেই বলুক আজকে ‘দি ইকোনোমিস্টে’র রিপোর্ট হচ্ছে, বিশ্ব খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেটাকে প্রশংসা করে রিপোর্ট ছাপিয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীর অন্য দেশ পারছে না।
“পাকিস্তানের অবস্থা দেখুন, রিজার্ভ নাই। আর আমাদের দেশে কত টাকা রিজার্ভ কমল, বাড়ল ... রিকশাওয়ালাও বলে রিজার্ভ এত টাকা। যেহেতু রিজার্ভ স্থিতিশীল, এখন আর কোনো কথা নাই।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা যদি নিজেদের বিরোধিতা না করি এবং ঐক্যবদ্ধ থাকি, আমাদের হারানোর শক্তি কারো নাই। তাই তৃণমূলে ঐক্য ও সংহতি অত্যন্ত প্রয়োজন।”
তার ভাষায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেবল আওয়ামী লীগের জন্য নয়, দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
“কারণ আগামী নির্বাচনে ফয়সালা হবে দেশ কি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তার ধারাবাহিকতা থাকবে, নাকি পাকিস্তানের মত পেছনের দিকে হাঁটবে। সেটিই ফয়সালা হবে। সুতরাং ঐক্য, সংহতি এবং সাংগঠনিক শক্তি এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কমিটি গঠনের পর তা দ্রুত পূর্ণাঙ্গ করতে এবং নিয়মিত বৈঠক ডাকারও পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “ইদানিং একটা ট্রেন্ড চালু হয়েছে কমিটি হয়, কিন্তু একবছরেও পূর্ণাঙ্গ হয় না। সেজন্য গত সম্মেলনে দলের গঠনতন্ত্রে একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে। কমিটির হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে হবে, না হলে কমিটি বাতিল হবে। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।
“কমিটি হওয়ার পর কমিটির মিটিং হয় না। অথচ গঠনতন্ত্রে প্রতি দুই মাসে মিটিং ডাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেটিও অনেক সময় ডাকা হয় না। বর্ধিত সভা করে সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিয়ে মিটিং করা উচিত। এতে দলের মধ্যে ঐক্য সংহতি বাড়ে।”
অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী, নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হকসহ জেলার শীর্ষ নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।