মহানগর বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণ শাখার যৌথ উদ্যোগে বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
Published : 14 Oct 2023, 12:41 PM
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে পাঠানোর দাবিতে রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেছেন নেতা-কর্মীরা।
শনিবার বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত। ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এই অনশন কর্মসূচি হচ্ছে।
অনশনের জন্য নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী মঞ্চ। দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, রহুল কবীর রিজভীসহ অন্য নেতারা রয়েছেন সেখানে। আর নেতা-কর্মীরা সামনের সড়কে মাদুর বিছিয়ে বসেছেন। তাদের অনেকের হাতে রয়েছে খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড।
সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, জয়নুল আবেদিন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, শাহজাদা মিয়া, আবদুল হালিম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা অনশনে আছেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্মসূচির শুরুতেই নয়া পল্টনের সড়কের এক পাশে যানচালাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে এই গণ অনশনে আসতে থাকেন এবং কার্যালয়ের সামনে পৌঁছানোর পর কাকরাইল মোড় থেকে ফকিরেরপুল পর্যন্ত রাস্তার এক পাশের সড়কে বসে পড়েন। তবে সড়কের অপরপাশে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
অনশনে একাত্মতা প্রকাশ করে দলের নেতৃবৃন্দ ও পেশাজীবী নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন সেখানে। প্রথম বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে যান বিএনপি নেত্রী। ওই বছরের অক্টোবরের শেষে হাই কোর্টের রায়ে সাজা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়। তার আগের দিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তার সাজা হয় ৭ বছর।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে খালেদার দণ্ড স্থগিত করে সরকার। ওই বছরের ২৫ মার্চ মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে তার বাড়িতে রয়েছেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তিতে শর্ত ছিল, তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। ওই শর্তেই প্রতি ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনি, লিভার জটিলতায় ভুগছেন। গত ৯ অগাস্ট থেকে তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল কয়েক দফা। কিন্তু ওই শর্তের যুক্তি দেখিয়ে সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।
বিদেশে যেতে চাইলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে গিয়ে আদালতে আবেদন করতে হবে অথবা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এরমধ্যে গত ৯ অক্টোবর এভারকেয়ার হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে আসেন খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী বলেন, “এখনও সময় আছে যদি ‘টিপস’ করা হয় এবং বিদেশে উন্নত মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে নিয়ে উনার ‘টিপস’ পরবর্তী লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য ব্যবস্থা করা হয়, সম্ভবত এখনও আমাদের হাতে অপশন আছে যে, আমরা হয়ত উনার অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারব।"