ঢাকার মোট আসন ২০টি; রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র কেনা ও জমা দেওয়া যাবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
Published : 26 Nov 2023, 12:13 AM
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকার ২০টি আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৮০ জন; তাদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য যেমন আছেন, তেমনি রাজধানী থেকে ভোট করতে আগ্রহী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদের রয়েছেন।
শনিবার পর্যন্ত এসব প্রার্থী ঢাকার রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র তুলেছেন। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী কেউ সেগুলো জমা দেননি বলে জানিয়েছেন রমনা থানার নির্বাচন কর্মকর্তা এম এম শাহনাজ পারভীন।
৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে ঘোষণা করা তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থী হতে রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে।
ঢাকা জেলার আসনগুলোর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় যেসব নির্বাচনী আসন রয়েছে সেগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার। এর বাইরের আসনগুলোর দায়িত্বে রিটার্নিং কর্মকর্তা ঢাকার জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের গুলশান-বনানী ও ভাসানটেক এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। তার স্ত্রী শেরীফা কাদের কুড়িল, খিলক্ষেত ও উত্তরা এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৮ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-১৭ আসন থেকে জি এম কাদেরসহ শনিবার পর্যন্ত সাতজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। তাদের মধ্যে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কথা বলেছেন মো. আবু সাঈদ নামের এক প্রার্থী রয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির শাহ আলম ও আলী আজম, জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন, স্বতন্ত্র মাসুম খান মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
শেরীফা কাদেরসহ ঢাকা-১৮ আসন থেকে তিনজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে বশীর উদ্দিন ও স্বতন্ত্র আনিসুর রহমান। এ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের হাবিব হাসান।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ঢাকা-১৪ আসন থেকে সর্বোচ্চ ১৩টি মনোনয়নপত্র নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচজন এ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু, আবু তাহের, কে এম দেলোয়ার হোসেন, মাকছুদা হক, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও এস এম হানিফ মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
এছাড়া জাতীয় পার্টির (জেপি) মফিজুল হক বেবু, শেখ শহিদুল ইসলাম, আব্দুর রব শিকদার, স্বতন্ত্র রুহুল আমিন ও এস এম নজরুল ইসলাম, বিএনএফের এফ এম কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির শাহজাদা সৈয়দ, সাইফুদ্দিন আহমেদ, গাউসিয়া রহমানিয়া।
অপরদিকে ঢাকা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। এর বাইরে ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন করম আলী।
ঢাকা-২ আসন থেকে মনোনয়নপত্র তুলেছেন ডা. হাবিবুর রহমান, যিনি দল বা স্বতন্ত্র কোথা থেকে নির্বাচন করবেন সেই তথ্য তালিকায় দেওয়া হয়নি। এ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কামরুল ইসলাম।
ঢাকা-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ আসন থেকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের হয়ে মোহাম্মদ জাফর এবং স্বতন্ত্র হিসেবে নিয়েছেন আলী রেজা।
ঢাকা-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক সাংসদ সানজিদা খানমের সঙ্গে দলের পরিচয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন আওলাদ হোসেন। বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এর বাইরে স্বতন্ত্র মনির হোসেন, ন্যশনাল পিপলস পার্টির মো মোশাররফ হোসেন মনোনয়পত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-৫ আসন থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ছয়জন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেউ নেই। এ দলের বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলামও এখন পর্যন্ত ফরম তোলেননি। অন্যদের মধ্যে তৃণমূল বিএনপির আবু হানিফ হৃদয়, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবু জাফর মো. হাবিব উল্লাহ রয়েছেন।
ঢাকা-৬ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ, গণফ্রন্টের আমিরুল ইসলাম সরকার, স্বতন্ত্র তাইজুদ্দিন আহমেদ রাসেল মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেউ নেননি।
ঢাকা-৭ আসনে মুহাম্মদ ইসমাইল নামে স্বতন্ত্র হিসেবে শুধু একজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম।
ঢাকা-৮ আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য ওয়ার্কাস পার্টির রাশেদ খান মেনন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের হয়ে নিয়েছেন দলের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন এবং স্বতন্ত্র এ কে এম লুৎফর রহমান, মো. সিদ্দিক হোসাইন হিরু, সরবার ফেরদৌস আলম ও এংরাজ বেগম মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-৯ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্টের মো. শফিউল্লাহ চৌধুরী।
ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগের মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
ঢাকা-১১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বর্তমান সাংসদ এ কে এম রহমতুল্লাহ। এছাড়া এ দলের হয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন খন্দকার মমিনুল আলম, মো. হেদায়েতউল্লাহ।
ঢাকা-১২ আসনে মো. নাঈম হাসান নামে ‘জনতার কথা বলে’ দলের একজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ আসনের সাংসদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
ঢাকা-১৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি সাদেক খান এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। আরও নিয়েছেন জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম।
ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বর্তমান সাংসদ ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং এ এম আবুল কাশেম। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনূস ফার্সি, বিএনএফের এস এম ইসলাম।
ঢাকা-১৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বর্তমান সাংসদ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, জাতীয় পার্টির আমানত হোসেন, বিএনএফের সজিব কায়সার।
ঢাকা-১৯ আসনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন আওয়ামী লীগের হয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান, মো. সাইফুল ইসলাম, তালুকদার মো. তৌহিদ জং (মুরাদ) এবং গণফ্রন্টের নূরুল আমিন, ন্যশানাল পিপলস পার্টির ইসরাফিল হোসেন সাভারী, তৃণমূল বিএনপির মাহবুবুল হাসান।
ঢাকা-২০ আসনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বর্তমান সাংসদ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ। জাতীয় পার্টির খান মো. ইসরাফিল এবং স্বতন্ত্র হিসেবে দেওয়ান নাজিম উদ্দিন, মোসাদ্দেক হোসেন, মো. মনোয়ার হোসেন ও মো. মাসুম কবির মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।