পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, জামায়াতের কর্মীদের সরিয়ে দিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
Published : 28 Oct 2023, 12:59 PM
পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি না পেলেও সমাবেশ করতে আরামবাগ হাই স্কুল ও কলেজের সামনের মঞ্চ তৈরি করছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা।
শনিবার বেলা পৌন ১টার দিকে নটরডেম কলেজের দক্ষিণ পাশের গলি দিয়ে পুলিশের ব্যারিকেড পার হয়ে জামায়াতের শত শত নেতাকর্মী মঞ্চের কাছে চলে যান। পরে পুলিশ আবারও সেখানে ব্যারিকেড দেয়। আরামবাগ হাই স্কুলের দুই পাশে পুলিশের ব্যারিকেডের দুই দিকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা অবস্থান নিয়ে আছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, সমাবেশ করতে জামায়াতে ইসলামীকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, জামায়াতের কর্মীদের সরিয়ে দিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াত। কিন্তু নিবন্ধন না থাকায় তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ।
রাজধানীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশের ঘোষণা ঘিরে শনিবার সকাল থেকে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা।
শাপলা চত্বরের প্রবেশপথের সড়কগুলোতে বসানো হয় ব্যারিকেড। বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা আরামবাগের সড়কে জড়ো হতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার পর তারা আরামবাগ হাই স্কুল ও কলেজের পাশে সড়কের পশ্চিম পাশে মাইক ও ছোট কয়েকটি মিনি ট্রাক জড়ো করে মঞ্চ তৈরি শুরু করেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমর একজন প্রতিবেদক জানান, আরামবাগ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সড়কে পর পর তিনটি কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়েছিল পুলিশ। প্রথমটি নটরডেম কলেজের সামনে, দ্বিতীয়টি আরেকটু দক্ষিণে বাস কাউন্টারগুলোর কাছাকাছি এবং তৃতীয় ব্যারিকেড মতিঝিল শাপলা চত্বরের কাছে।
বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে নটরডেম কলেজের সামনে পুলিশের একটি ব্যারিকেড ভেঙ্গে মতিঝিলের দিকে এগিয়ে যান জামাতকর্মীরা। পুলিশ তখন সরে গিয়ে সারা টাওয়ারের সামনের ব্যারিকেডের সামনে অবস্থান নেয়। তখন আরামবাগের পাশাপাশি নটরডেম কলেজের সামনেও অবস্থান নেন জামায়াত-শিবির কর্মীরা। নটরডেম কলেজের দক্ষিণ পাশের গলি দিয়ে পুলিশের ব্যারিকেড পার হয়ে জামায়াতের শত শত নেতাকর্মীকে মঞ্চের কাছে যেতে দেখা যায়।
সমাবেশ করতে পুলিশের কাছ থেকে লিখিত বা মৌখিক অনুমতি পাওয়া গেছে কিনা, সে বিষয়ে জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী কথা বলেননি।
এ বিষয়ে আরামবাগ এলাকায় উপস্থিত ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত লিটন কুমার সাহা বলেন, এখানে জামায়াত ও বিএনপির কর্মীরা রয়েছেন, তারা ওখানেই সমাবেশ করতে চাচ্ছেন।
সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “ওভাবে অনুমতি দিতে পারি না। তবে তারা এখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে।”
সমাবেশ করার জন্য জামায়াত আরামবাগ এলাকায় মঞ্চ তৈরি করছে, তাদের সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “আমরা কোনো সমাবেশের অনুমতি দেইনি। তাদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে বলছি।”
এ ব্যাপারে পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তাদের (জামায়াতে ইসলামী) ডিসপাস করার জন্য বলেছি (পুলিশকে)। আমরা কীভাবে ডিসপাস করব এটা আমাদের কৌশলগত বিষয়।”
আর ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, “জামায়াতকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা অনুমতি ছাড়াই মঞ্চ তৈরি করছে। তবে তারা যদি ভায়োলেন্স না চালায় তা হলে বাধা দেওয়া কোন সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত নেই। তবে ভায়োলেন্স করলে আমরা অ্যাকশনে যাব।”