৬ জুন বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন ছাত্র ইউনিয়নের দলীয় সংগীতের রচয়িতা ও শিশু সাহিত্যিক আখতার হুসেন।
Published : 04 Jun 2024, 11:03 PM
‘আমাদের শপথের প্রদীপ্ত স্বাক্ষরে নূতন সূর্যশিখা জ্বলবেই’ স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ৪২তম জাতীয় সম্মেলন হবে আগামী ৬ থেকে ৮ জুন।
প্রথম দিন ৬ জুন বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন ছাত্র ইউনিয়নের দলীয় সংগীতের রচয়িতা ও শিশু সাহিত্যিক আখতার হুসেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান সংগঠনটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় উদ্বোধনী পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে।
৭ ও ৮ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রে হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে আগামী এক বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন এবং সংগঠনের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের ৬০টি জেলা সংসদ সম্মেলনকে সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ৪২তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ১৩টি দাবি উত্থাপন কর হয়। দাবিগুলো হল-
১. একই ধারার বিজ্ঞানভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতি চালু করতে হবে;
২. শিক্ষাখাতে জিডিপির ৮ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে;
৩. শিক্ষা উপকরণের মূল্য কমাতে হবে;
৪. উচ্চশিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণে ইউজিসির নতুন কৌশলপত্র বাতিল করতে হবে;
৫. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত কমিয়ে ৩০:১ করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে;
৬. বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির পথিকৃৎ এবং গবেষণামুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে;
৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে;
৮. শিক্ষা শেষে কাজের নিশ্চয়তা দিতে হবে;
৯ সরকারি চাকুরির পরীক্ষায় আবেদন ফি বাতিল করতে হবে;
১০. প্রয়োজনীয় সংখ্যক গুণ-মান সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগে দলীয় ও স্বজনপ্রীতি পরিহার করে দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, যথাযথ কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করতে হবে;
১১. বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে;
১২. বাক-স্বাধীনতা হরণকারী সকল কালাকালুন বাতিল করতে হবে;
এবং
১৩. বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রদ্যের মূল্য কমাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা। তিনি বলেন, “আজকে এই সময়ে এসে আমাদের প্রতিনিয়ত বাঁচার সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এই রাষ্ট্র, এই সরকার আমাদের একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে, অপরদিকে আমাদের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণের উপর করের বোঝা বাড়ানো হচ্ছে।
“শিক্ষাগ্রহণের অধিকারের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষা শেষে কর্মের নিশ্চয়তার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। দেশে বেকারের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। অথচ সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে নজর না দিয়ে, সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার নামে বেকারদের ঘাড় ভেঙে অর্থ আদায় করছে।”
মাহির বলেন, “আমাদের ভোটাধিকার হরণ করে আমাদের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই সরকার কোনো সমালোচনা শুনতে আগ্রহী নয়। সমালোচনা করলে মামলা, জেল, নির্যাতন নেমে আসছে তার উপর। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে কনসেনট্রেশান ক্যাম্প বানিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের দেশকে এ ভয়ানক পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে বরাবরের মত এদেশের ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।”
অন্যদের মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি দীপক শীল, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রিতম যাকির, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজোয়ান হক মুক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।