পুলিশের বাধা ও ব্যারিকেড অতিক্রম করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন জোটের নেতাকর্মীরা।
Published : 09 Jul 2024, 05:29 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে রেল কানেকটিভিটি বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তির প্রতিবাদে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য সামনে থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্র জোট।
মিছিলটি দোয়েল চত্বর হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে যাওয়ার পথে শিক্ষা অধিকার চত্বরের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এসময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে পুলিশের বাধা ও ব্যারিকেড অতিক্রম করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন জোটের নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক বলেন, “গত ২২ জুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। যার মাধ্যমে ভারতকে রেলপথে করিডোর দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
“বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে চলাচল করবে ভারতীয় ট্রেন। ট্রেনে কী বহন করা হবে বাংলাদেশ তা যাচাই করতে পারবে না। ট্রানজিটের নামে এই করিডোর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের উপর বড় ধরনের আঘাত। এতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিপন্ন হবে।”
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, “এর আগে ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি হাসিনা-মনমোহন চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দেয়া হয়েছে। বিগত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে ভারত আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছে। নিজেদের গদি টিকিয়ে রাখার প্রতিদান স্বরূপ ভারতকে খুশি করতে এবার এই করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।”
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায় বলেন, “সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ভারত বাংলাদেশের স্থল, নৌ, আকাশ এবং রেলপথে কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ২০১০ সাল থেকে ভারত নানাভাবে টালবাহানা করে আসছে। আর ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে আমাদের দেশের উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিণত করে চলেছে। শুধু তিস্তাই নয়, ৫৪টি আন্তর্জাতিক নদীর পানি ভারত এক তরফাভাবে প্রত্যাহার করে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ন্যায্য পাওনা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে চলেছে।”
জোটের সম্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগিতায় ভারতসহ অন্যান্য সম্প্রসারণবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো বাংলাদেশের উপর আগ্রাসন চালিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া।
“তাই, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনকে রুখে দিয়ে ভারতের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক আগ্রাসন, সীমান্ত হত্যা এবং জাতীয় স্বার্থ বিপন্নকারী রেল করিডোরসহ দেশবিরোধী নানা চুক্তির বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
জোটের সহ-সমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সদস্য রেদোয়ান আহমদ বক্তব্য দেন।