শেখ হাসিনা বলেন, “হরতাল-অবরোধ মানে কি কয়েকখান বাস পোড়ানো, গাড়ি পোড়ানো, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো?”
Published : 13 Dec 2023, 07:34 PM
গাজীপুরে রেললাইন কাটা এবং ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় শিউরে উঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “একটু চিন্তা করে দেখুন, কী রকম ধ্বংসাত্মক কাজ!
“মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত করতে পারবে না”, বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার গণভবনে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ- এফবিসিসিআইয়ের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ে গাজীপুরের রেল লাইন কেটে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন শেখ হাসিনা।
এই ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, “রেললাইন কেটে ফেলে দিয়ে… প্রায় ৮টা বগি পড়ে যায়, একজন মানুষ মারা যায়, কয়েকজন আহত। তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। তার মানে হচ্ছে রেলের বগি ফেলে দিয়ে মানুষকে হত্যা করা।”
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা মানুষ মারার জন্য রেললাইন উপড়ে ফেলে বা রেললাইন কেটে দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ মারার পরিকল্পনা করে বা জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে, এদের মধ্যে মনুষ্যত্ব বোধ বলে কিচ্ছু নেই।
“যারা রেললাইন কেটে দিয়ে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করে আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়; আর পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ, সাংবাদিক থেকে শুরু সাধারণ মানুষকে মারে, মিছিলে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে, এদের ক্ষমা নাই। এদের শাস্তি একদিন পেতেই হবে। জনগণকে বলব এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য।”
এই আন্দোলন করে তারা কী পাবে- এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “বিএনপি যে এই জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে, প্রতিদিন তারা অবরোধ আর হরতাল ডেকে যাচ্ছে। হরতাল-অবরোধ মানে কি কয়েকখান বাস পোড়ানো, গাড়ি পোড়ানো, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো?
“চাল যাচ্ছে, চালের গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে, ধান যাচ্ছে ধানের গাড়ি পোড়াচ্ছে। মানে মানুষকে ক্ষুধার্ত মারা। এই ঘটনা এর আগেও তারা করেছে ২০১৩ সালে। আমি জানি না তাদের কোনো মতে কেউ থামাতে পারবেন কি না। এই মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত তো করতে পারবে না।”
‘মানুষকে পুড়িয়ে মারার মধ্য দিয়ে আন্দোলন হয়, সেটা জানা নাই’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, “আমরাও আন্দোলন করেছি জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, আর মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয় সেটা চিন্তা করে। কিন্তু আমি এ রকম আন্দোলন দেখি নাই।
“এটা দেখেছি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে, তারা আমাদের এভাবে সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে। আর এখন দেখি ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের হামলা, হাসপাতাল রেহাই পায় না। হাসপাতালের ওপর পর্যন্ত তারা বোম্বিং করে। ঠিক আমাদের দেশে যেন সেই চিত্রটাই দেখতে পাই।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আন্দোলনের নামে অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা করা। পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেওয়া। পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশকে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা। এ রকম বীভৎস ঘটনা বাংলাদেশে ঘটানো হচ্ছে। এটা নাকি আন্দোলন। তাহলে কার স্বার্থে আন্দোলন?”
ক্ষমতা আকড়ে ধরার চেষ্টা আওয়ামী লীগের নেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণের কাছে যাবে, জনগণ যাকে ভোট দেবে, সে ক্ষমতায় আসবে।”
আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা যতক্ষন ক্ষমতায় আছি দেশের উন্নতি করছি। দেশে যে উন্নতি হয়েছে এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজকে বাংলাদেশটা বদলে গেছে।”
ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, “আমাদের তো হাওয়া ভবন নেই। কারো পাওনা দিয়ে ব্যবসা নিতে হয় না। ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারেন। অন্তত এইটুকু সুযোগ আমরা করে দিয়েছি।”