ভারতের সঙ্গে দেশের সম্প্রতি সম্পাদিত চুক্তি-সমাঝোতার বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনে আসেনে অলি।
Published : 07 Jul 2024, 09:13 PM
আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের ‘সেবাদাস’ হিসেবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি এর সভাপতি অলি আহমেদ বীর বিক্রম।
রোববার বিকালে ঢাকার মগবাজারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভারতের সঙ্গে দেশের সম্প্রতি সম্পাদিত চুক্তি-সমাঝোতার নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনে এসে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে অলি আহমেদ বলেন, “এই অবৈধ সরকারের কোনো এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) সই করার সাংবিধানিক অধিকার নেই। কারণ তারা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি নয়। বিশেষ করে, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে যে এমওইউ স্বাক্ষর করেছে, তাতে দেশের জন্য অনেকগুলো ক্ষতিকর, সংবেদনশীল এবং স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে।
“আওয়ামী লীগ যেনতেনভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এরা (সরকার) তাদের (ভারত) সেবাদাস হিসেবে কাজ করছে, ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করছে।”
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ সংযুক্তির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান যোগাযোগের প্রসঙ্গ টেনে আনেন এলডিপির সভাপতি।
তিনি বলেন, “কানেকটিভি হয় কখন? আপনার সাথে যখন আমার কোনো ধরনে সমস্যা থাকে না, যেটা আমি বলেছি ইউরোপর কথা। ইউরোপে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য কোনো ভিসার প্রয়োজন পড়ে না। তারা এক দেশ অন্য দেশের ওপর হস্তক্ষেপ করে না, তারা একদেশ অন্যদেশের ওপর অবৈধভাবে নির্বাচন করার জন্য সাহায্য করে না, কাউকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য সাহায্য করে না।”
“ভারত অবৈধভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকার জন্য এবং বাংলাদেশের সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন করার জন্য তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখেছে। সুতরাং এখানে দুইদেশের মধ্যে কোনো সমতা নেই।”
এলডিপি সভাপতির আগে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরে ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি-সমঝোতা নিয়ে সমালোচনা করেছে। অবশ্য সরকার বলছে, এসব সমঝোতায় দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
তবে অলি আহমেদের ভাষ্য- অসম দেশের মধ্যে এ ধরনের চুক্তি হলে দেশের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের জমির পাশ দিয়ে ভারতের রেললাইন যাবে, এতে কৃষকদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারতকে এ সুযোগ দেওয়া ন্যায়সঙ্গত হবে না।
“তাছাড়া ভারত অবাধে তাদের পূর্বাঞ্চলে যে রাজ্যগুলো আছে, সেখানে তাদের সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবাধ যাতায়াত হবে, সেটা কীভাবে আপনি বন্ধ করবেন। তাদের সীমান্তরক্ষীরা প্রতিদিন বাংলাদেশের জনগণকে হত্যা করছে, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ নেই।”
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে এলডিপি সভাপতি বলেন, “বাস্তবতা এবং তাদের আচরণ দুইটাই ভিন্ন। অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বারবার জাতির সামনে বলেছেন যে, আমরা ভারতকে যা দিয়েছি, তা তারা কখনও ভুলতে পারবে না।”
এলডিপির সভাপতি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, তাদের দেশ ছেড়ে যাওয়া, ঋণের সুদ মওকুফ ও অর্থ পাচার বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “যাকে ইচ্ছা দুর্নীতি করার পর টাকা পাচার করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ও সময় দেওয়া হচ্ছে।”
এ সময় সব সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ট্যাক্স-রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার কথা বলেন অলি।
অন্যদের মধ্যে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার, নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন।