বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া বিএনপি ও সমমান দলগুলো দুর্গা পূজা শেষে ‘কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার’ কথা বলছে।
Published : 11 Oct 2023, 08:35 PM
সরকার পতনের ‘এক দফা’ আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঠিক করতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি।
বুধবার রাতে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং লেবার পার্টির নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক হয় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে।
এসব বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন। লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তবে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নিয়ে গণমাধ্যমকে কিছু জানানো হয়নি।
আগামী জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট ধরে নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা করতে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির মধ্যে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া বিএনপি ও সমমান দলগুলো দুর্গা পূজা শেষে ‘কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার’ কথা বলছে। তবে কী ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখনও গণমাধ্যমকে কিছু বলেননি জোট নেতারা।
বিএনপির দাবি, নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠন করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। এরপর নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
দাবি পূরণ না হলে নির্বাচন করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বিরোধী দলগুলো।
এমন দাবির মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াত জোট ও সমমনাদের বাদ দিয়েই হয় দশম সংসদ নির্বাচন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে আগেও আন্দোলনে যাওয়ার কথা জানিয়েও পরে ভোটে আসে বিএনপি ও সমমনারা।
তবে সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে বিএনপি আবার তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে ফিরে গেছে। দলটি দাবি করছে, ২০১৪ সালে তাদেরকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা গেলেও এবার তার সেটি সম্ভব হবে না।
সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বিএনপির দাবিকে পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না। তারা বলছে, সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন হবে না। ভোটে আসা বা না আসা কোনো দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।
বৈঠকে যারা ছিলেন
বিএনপির ভেঙে দেওয়া ২০ দলীয় জোটের ১২ শরিক মিলে গড়ে তুলেছে ১২ দলীয় জোট। এই জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএলডিপি শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মনসুর হাসান রায়পুরী, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাপপার (তাসমিয়া প্রধান) রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির (একাংশ) ফারুক রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করিম ও ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম অংশ নেন বৈঠকে।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের বৈঠকে ছিলেন এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপা (লুৎফুর রহমান) খন্দকার লুৎফুর রহমান, এসএম শাহাদাত, গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, আবু সৈয়দ, বিকল্পধারার নুরুল আমিন বেপারী, শাহ আহমেদ বাদল, ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী, আবদুল বারিক, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মাইনোরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডল, দিলীপ কুমার দাস, মুসলিম লীগের নাসিম খান, এনডিপির আবু তাহের, আবদুল্লাহ আল হারুন সোহেল, ডেমোক্রেটিক লীগের আকবর হোসেন।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির পক্ষে বৈঠকে ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এসএম ইউসুফ আলী, আমিনুল ইসলাম, হিন্দুরত্ন রাম কৃষ্ণ সাহা ও জহুরা খাতুন জুঁই।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে সরকারের পতনের রুপরেখা ঘোষণা করে বিএনপি। এরপর সমমনা জোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, এলডিপি, লেবার পার্টি, এনডিএম প্রভৃতি জোটকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা করে বিএনপি।