তিনি বলেন, “শৃঙ্খলার সঙ্গে থাকতে হবে। প্রতিযোগী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন“
Published : 11 Dec 2023, 09:20 PM
বিএনপির বর্জনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বাধা না দিলেও ভোটের মাঠে কোনো বিশৃঙ্খলা দেখতে চায় না আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভোটের মাঠে ‘মল্লযুদ্ধ’ দেখতে চান না তারা।
সোমবার সন্ধ্যায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
নৌকা বনাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে কাদের বলেন, “শৃঙ্খলার সঙ্গে থাকতে হবে। প্রতিযোগী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সন্ত্রাসীরা প্রশ্রয় পায়, এমন কোনো কাজ করা যাবে না। নৌকার সঙ্গে মল্লযুদ্ধে নামা যাবে না।”
নির্বাচন নিয়ে বদনামের ভাগিদার হতে চান না জানিয়ে তিনি বলেন, “এমন নির্বাচন করতে চাই যেন সারা বিশ্ব প্রশংসা করে।”
নেতাকর্মীদের আচরণবিধি মেনে চলার পাশাপাশি সতর্ক পাহারায় থাকার আহ্বানও জানান আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি বলেন, “বিএনপির নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে, জনগণকে নিয়ে এদেরকে প্রতিহত করতে হবে।
“নির্বাচনের পক্ষে সারা দেশে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে, তারা হরতাল অবরোধ দিচ্ছে। কিন্তু মানুষ তা মানছে না।”
যারা মনোনয়ন পায়নি তাদের হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগ কোনো না কোনোভাবে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে, শেখ হাসিনা কখনো অবমূল্যায়ন করেন না।”
বিএনপিকে জমায়েতের অনুমতি কীভাবে
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে রাজধানীতে আওয়ামী লীগকে সমাবেশে অনুমতি না দিলেও বিএনপিকে জমায়েতের অনুমতি দেওয়া নিয়েও প্রশ্নও তুলেছেন কাদের।
তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। তারা আমাদের বাইরে সমাবেশ না করতে অনুরোধ জানিয়েছে। আমরা তাদের অনুরোধ সম্মানের সঙ্গে পালন করেছি।
“কিন্তু যারা (বিএনপি) নির্বাচন পণ্ড করার জন্য নাশকতা করছে, তাদেরকে মানবাধিকার দিবসে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি কীভাবে দিল?... নির্বাচনবিরোধীদের এই ‘আশ্রয়-প্রশ্রয়’ আপনারা কেন দিলেন? এখানে কি ন্যায়বিচার হল? আপনি আমাকে দিলেন না, দিলেন তাদের যারা নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চায়।”
বিএনপির ‘সন্ত্রাসনির্ভর’ রাজনীতি সেভাবে উঠে আসছে না মন্তব্য করে করে গণমাধ্যমের ‘দায়িত্বের’ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “বিএনপি পুলিশের ওপর হামলা করল, হাসপাতালে হামলা করল, অগ্নিসন্ত্রাস করল, এসব নিয়ে কলাম আর প্রতিবেদন আসে না।
“সাংবাদিকের ওপর সেদিন হামলা হয়েছে, আপনাদেরও দায়িত্ব আছে। এই অশুভ শক্তি শুধু দেশের না, সাংবাদিকদেরও শত্রু। এদের নিয়ে আপনারা যদি পক্ষপাত করে লেখেন, সেটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “হামলা করলে মামলা হবে, মামলা হলে গ্রেপ্তার হবে, সাজা হবে। পুলিশ মারবেন এটা কি বিনাবিচারে যাবে?”
বিজয় দিবসের কর্মসূচি
আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালনে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিও তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি জানান, সেদিন দলের পক্ষ থেকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হবে। পরদিন হবে আলোচনা সভা।
১৮ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর পর্যন্ত হবে বিজয় মিছিল।
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনে সেদিন বিকেলেও হবে আলোচনা সভা। এতে থাকবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।
যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতারাও সেখানে অংশ নেন।