‘নার্ভাসনেস’ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ‘অশালীন’ বক্তব্য: ফখরুল

খালেদা জিয়াকে নিয়ে বক্তব্যের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন ঘটাচ্ছেন দাবি করে এমন ‘কাদা ছোঁড়াছুড়ি’ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবারের সমাবেশসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রোববার এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির মুখপাত্র দাবি করেছেন, ৫ জানুয়ারির ‘অবৈধ’ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনকারী শেখ হাসিনা অস্থিতরতা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে আক্রমণ করছেন।

ফখরুল বলেন, “এই সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। এখন এতটাই তারা নাভার্স হয়ে গেছে যে, যিনি তিন তিন বার দেশের প্রধানমন্ত্রী (খালেদা) ছিলেন, তাকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলেছেন।

“দেশের সর্বোচ্চ আদালত কাকে ‘রং হেডেড’ বলেছিল? নিশ্চয়ই বেগম খালেদা জিয়াকে নয়, আপনাকেই (শেখ হাসিনা) বলেছিল। তাই বলব, দয়া করে এরকম কাদা ছোড়াছুড়ি, অশালীন রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কথা-বার্তা বলা বন্ধ করে জনগণের সমস্যার সমাধান করুন।”

১৫ অগাস্ট জাতির জনক হত্যাকাণ্ডের দিন জন্মদিন পালন করায় খালেদা জিয়াকে ‘বিকৃত চরিত্র ও মানসিকতার’ মানুষ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন শেখ হাসিনা।

২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা এবং সহিংস আন্দোলনের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে ‘খুনি’ও বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর একদিন আগে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাসাসের এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফখরুল। বিএনপি প্রতিষ্ঠার সময় থেকে এ পর্যন্ত জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নানা কার্যক্রমের ছবি এই প্রদর্শনীতে স্থান পায়।

দলের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সোমবার সকাল ১০টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা। বিকালে রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে হবে আলোচনা সভা।

ফখরুল জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন এবং বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের বিরোধিতা করে বলেন, এসবের মধ্য দিয়ে সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায়।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও সমালোচনা করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফখরুল।

দলের নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী, নিখোঁজ ওয়ার্ড কমিশনার চৌধুরী আলমসহ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৬৫ জন নেতা-কর্মী গুম হওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

“পরিস্থিতি এমন যে কোনো রাজনৈতিক নেতা আজ বলতে পারছেন না তারা ভালো আছেন। ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশে স্বৈরতন্ত্র চলছে। যাকে নিয়ে এই অবৈধ সরকার ঘর করছে, সেই হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদও গতকাল বলেছেন, বাংলাদেশ গুমের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।”

বিএনপি প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই বিএনপির বিরুদ্ধে একের পর এক আঘাত এসেছে, ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু জিয়ার আদর্শে বলীয়ান হয়ে ফিনিক্স পাখির মতো ধ্বংসস্তূপ থেকে বিএনপি বার বার জেগে উঠেছে।”

গণতন্ত্র ‘পুনরুদ্ধারে’ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবির আন্দোলন সফল করতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল।

জাসাস সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান,অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু উপস্থিত ছিলেন।

পরাজিত শক্তির উত্থান আর ঘটবে না: হাসিনা