সরকার পরিবর্তন হলে ‘গুমের’ প্রত্যেকটি ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ঘোষণা দিলেন বিকল্প ধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
Published : 31 Aug 2014, 06:35 PM
আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে রোববার সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এক আলোচনা সভায় এই ঘোষণা দেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবেই এক সম্মেলনে ‘গুম-খুনের’ শিকার পরিবারগুলো তাদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন।
বিএনপির এখনকার রাজনৈতিক মিত্র দল বিকল্প ধারার সভাপতি বলেন,“একটা গুমের খবরে আমাদের আত্মা কেঁপে উঠে, অথচ গণতন্ত্রবিরোধী সরকারের আত্মা কাঁপে না।
“গুমের শিকার পরিবার-পরিজনকে আমি বলতে চাই, আগামীতে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই জাতীয় কমিটি করে গুম-অপহরণের ঘটনা অনুসন্ধান করা হবে। দোষীদের খুঁজে বের করে দ্রুত বিচার করা হবে। এই বিচার ছাড়া জাতির ঘুম হবে না।”
গুম-খুনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, “র্যাব-পুলিশ পরিচয় দিয়ে গুম করার ঘটনা ঘটেছে। এসব বাহিনী সরকারের অংশ। র্যাব-পুলিশ সরকারের নির্দেশেই ওই সব ঘটনা ঘটিয়েছে।
“গুম-অপহরণের ঘটনার দায় প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা এড়াতে পারবেন না। তাদের অবশ্যই একদিন জবাবদিহি করতে হবে।”
গুম ও অপহরণ নিয়ে বিএনপির পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো সমালোচনামুখর হলেও সরকারের পক্ষ থেকে তা বরাবরই অস্বীকার করা হচ্ছিল।
তবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববার দাবি করেছেন, গুম বা অপহরণের যতগুলো ঘটনার অভিযোগ তোলা হচ্ছে, বাস্তবে তা ততটা নয়।
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে সহমত জানানো বি চৌধুরী বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করতে আন্দোলনের আহ্বানও জানান।
“দেশে আজ গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। কথিত একটি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫২ জন নির্বাচিত হয়েছে। ৫ ভাগ জনগণের ভোটে অদ্ভুত এক নির্বাচনে সরকার গঠনের এমন নজির বিশ্বের কোথাও নেই।”
বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগের বিরোধিতাও করেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সিইসি বিচারপতি এম এ রউফ, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, এম এ আজিজ, চিকিৎসক নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, অধ্যাপক শামসুল আলম, প্রকৌশলী নেতা রফিকুল ইসলাম বাচ্চু,বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।
সভায় ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনাসহ ‘গুমের’ শিকার পরিবারগুলোর ১০ জন তাদের বেদনার কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, উলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।