দলগুলোর কাজে হতাশা প্রকাশ করে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চেয়েছেন আয়েশা খানম ও খুশি কবির।
Published : 25 Jan 2014, 04:49 PM
দেশে নারী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান এই দুই সংগঠক শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠানে তাদের হতাশার কথা জানান।
নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কোন পথে যাচ্ছে- তার বিশ্লেষণে এই আলোচনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও ছিলেন।
একুশ শতকে এসেও দেশ ‘মধ্যযুগীয়’ রাজনীতির চর্চা হচ্ছে দাবি করে মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম বলেন, “ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক যে রাজনীতির চর্চা হচ্ছে, সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হতে হবে।”
নিজের করি’র প্রধান খুশি কবির বলেন, “এখন রাজনৈতিক দলগুলোর মূলভিত্তি জনগণ নয়। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা নিয়ে নয়, দলকে কিভাবে আরো প্রভাবশালী করা যায়, ভোটে জেতা যায়, তা নিয়ে ব্যস্ত।”
ভোটের আগে ইশতেহারে নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে হাজির হলেও দলগুলো পরে আর জনগণের কাছে ফিরে আসেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের প্রায় সব বক্তাই সঙ্কট এড়াতে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানান, নারী নেত্রীদের কণ্ঠেও ছিল একই সুর।
তবে আয়েশা খানম আরো বলেন, “নির্বাচন কিভাবে হবে, শুধু তা নিয়েই যেন আলোচনা না নয়, বরং দেশের অন্যান্য ইস্যুগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে এগোতে হবে।”
বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়ার পরামর্শও দেন মহিলা পরিষদের সভানেত্রী। খুশি কবিরও জামায়াত ইস্যুতে দলগুলোকে অবস্থান স্পষ্ট করার তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, “যখন দেখি জামায়াত যোগ দিচ্ছে আওয়ামী লীগে; তখন হতাশ হই। আমাদের প্রধান দুটি দলকে স্পষ্ট করতে হবে, তারা যা বলেন, তা আসলেই বিশ্বাস করেন কি না।”
অনুষ্ঠানে সিপিবি সভাপতি সেলিমও জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের বিষয়ে আওয়ামী লীগকে অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেন।
“বিএনপি তো পরিষ্কার করেছে, জামায়াত তাদের সঙ্গে থাকবে। আওয়ামী লীগ যদি অগ্রসর না হয়, তাহলে আরো বিপদ বাড়বে। আওয়ামী লীগ কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে না?”
“জামায়াত সন্ত্রাসবাদী দল হিসেবে নিষিদ্ধ হলে, এমন নিষিদ্ধ দলের সঙ্গে যারা জোট করবে তারাও একইভাবে চিহ্নিত হবে। এসব বিষয়ে কনসেনসাসে আসতে হবে।”
এই অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা অংশ নেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন সাবেক কূটনীতিক নাসিম ফেরদৌস, সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর ও মোজাম্মেল বাবু।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ওয়েবসাইটে এই অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হয়। সরাসরি সম্প্রচার করা হয় একাত্তর টেলিভিশনেও।