নির্বাচন কমিশন গঠনের নতুন আইনটি ‘বাকশালের মতোই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Published : 30 Jan 2022, 06:58 PM
সংসদে পাস হওয়া নতুন আইনটি নিয়ে রোববার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, “যে কাজটা ১৯৭৫ সালে করতে পারেনি, ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে সেই কাজ করার জন্য ধীরে ধীরে এগিয়ে গেছে। একটা মোড়ক রেখেছে সামনে, একটা ছদ্মবেশ যে বহুদলীয় গণতন্ত্র এখানে আছে। আসলে এখানে কোনো বহুদলীয় গণতন্ত্র নেই। সত্যিকার অর্থে জনগণ তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার পর্যন্ত পায়নি।
“আবার একটা আইনও তৈরি করল কয়েকদিন আগে। ঠিক সেই বাকশালের মতোই। ওটা ১১ মিনিটে ছিল, এটা সাত দিনের মধ্যে পাস করে নিল।”
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপির জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ’২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ : বাকশাল’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘১৯৭৫ : বাকশাল’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।
এই গ্রন্থটি বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় আলোচনা সভা থেকে।
গ্রন্থটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সূচনা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশন সেন্টারের পরিচালক সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বাকশালের মধ্য দিয়ে দেশে অর্থনীতিকে ধবংস করা হয়েছিলো, রাজনীতিকে ধবংস করা হয়েছিলো, স্বপ্নকে ধবংস করা হয়েছিলো। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে তারা দেশ ও জাতিকে গভীর অন্ধকারে ভেতরে নিয়ে গিয়েছিল।
“আজকে ঠিক একইভাবে দেখছি, আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে দলীয়করণ করেছে। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ডকে অত্যন্ত নিষ্ঠুর হাতে দমন করে বিশেষ করে যারা স্বাধীন চেতা গণতান্ত্রিক মানুষ তাদেরকে হত্যা-গুমের মধ্য দিয়ে তাদেরকে ধবংস করে দেয়া হচ্ছে। প্রতিবাদের ভাষাকে বন্ধ করা হচ্ছে।”
নেতা-কর্মীদের উদ্দে্শে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকে ৪৭ বছর পরে আবার বাকশাল প্রতিষ্ঠার যে নীল নকশা শুরু হয়েছে, এই নীলনকশাকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে।
“আজকে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী বাকশালের নব্য প্রেত্মাতার যে সরকার, তাকে সরিয়ে জনগণের একটা সরকার, জনপ্রতিনিধির পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।”
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছেড়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবিও জানান ফখরুল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র এক সাথে যায় না। ৭৫ এ বাকশাল প্রতিষ্ঠা এবং গত ১৪ বছর আওয়ামী লীগের এই শাসন, বিনা ভোটে নির্বাচিত সরকার, রাতে অন্ধাকারে ডাকাতির সরকার আজকে গায়ের জোরে বাংলাদেশ পরিচালনা করছে। সেজন্য বাংলাদেশেও আজকে সেই বাকশালের চিন্তা চেতনা যেটা অলিখিতভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
“তাই উপসংহার একটাই যে, এই আওয়ামী লীগ তথা এই সরকার আর গণতন্ত্র পাশাপাশি যেতে পারে না। তারা স্বৈরাচারী তারা গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি। এখন সময় এসেছে দলমত নির্বিশেষে সকলে মিলে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারকে সরানোর।”
বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় এই ভার্চুয়াল আলোচনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বক্তব্য রাখেন।