প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অংশ হিসেবে বিএনপি বিদেশে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছে।
Published : 27 Jan 2022, 09:30 PM
“আজকে ইলেকশন সামনে নিয়ে এই লবিস্ট দিয়ে টাকা দেওয়া হচ্ছে। এই টাকার পাই পাই হিসাব আমরা আদায় করতে চাই, পাই পাই হিসেব দিতে হবে।”
বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে বৃহস্পতিবার সংসদে একথা বলেন শেখ হাসিনা।
এই অর্থ অবৈধ উৎস থেকে পাওয়া দাবি করে তিনি বলেন, “লক্ষ লক্ষ ডলার তারা খরচ করেছে। কোটি কোটি ডলার খরচ করেছে। আমার প্রশ্ন, এই অর্থ কোথা থেকে তারা পেল? বিদেশি ফার্মকে এই যে লক্ষ লক্ষ বা কোটি কোটি ডলার যে তারা পেমেন্ট করল, এটা কোথা থেকে পেল? এই অর্থ কিভাবে বিদেশে গেল?
“পাঁচ বছর ২০০১ থেকে ক্ষমতায় থেকে জনগণের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে সেই টাকা দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত।”
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো, জঙ্গিদের রক্ষা, জাতির পিতার খুনিদের বাঁচানো, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিপরীতে আওয়ামী লীগ দেশের ভাবমূর্তি উঁচু করতে কাজ করছে।
“হ্যাঁ, সব সময় পিআর ফার্ম নেওয়া হয় আমাদের, যাতে বিনিয়োগ বাড়ে, উৎপাদন বাড়ে, আমরা যেন বেশি রপ্তানি করতে পারি, আমাদের দেশের অধিকার সংরক্ষণের জন্য করা হয়।
“কিন্তু বিএনপির কাজটা কী ছিল? বাংলাদেশটাকে ধ্বংস করার জন্য। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দিয়ে, অসত্য তথ্য দিয়ে দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য।”
তবে জনগণ বিএনপির কথায় বিভ্রান্ত হবেন না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আমলের বিতর্কিত নির্বাচনের কথাও সংসদে বলেন তিনি।
র্যাবের সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয়, যারা সন্ত্রাস দমনে সফল, যারা এই দেশটাকে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছে, যারা সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষা করেছে, সাধারণ মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণ করেছে, তাদের উপরেই যেন আমেরিকার রাগ।”
তবে আমেরিকাকে পুরো দোষ না দিয়ে স্পিকারকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, “ঘরের ইঁদুর বাঁধ কাটলে কাকে দোষ দেবেন? কালকে আপনি শুনেছেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন। এই যে সমস্ত তালিকা। এটা আমার বক্তৃতা হিসেবে আপনার কাছে আমি দিয়ে যাবে, আমি চাই প্রসিডিংসটা থাক।”
তিনি বলেন, “যাদের কোনো দেশপ্রেম নাই, জনগণের প্রতি যাদের কোনো দায়বদ্ধতা নাই, জনগণের প্রতি কোনো ভালোবাসা নাই, তারাই পদ্মা সেতু বন্ধ করে, টাকা বন্ধ করার চেষ্টা করে, তারাই দেশের উন্নতি বন্ধ করতে চেষ্টা করে, তারাই বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করে।”
বিপরীতে দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে সব দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
“এটা তো হিংসার ব্যাপার হবেই। এটা যাদের পছন্দ না, যাদের মধ্যে কোনো দেশপ্রেম নেই, যারা শুধু লুটে খেতে পারে, তারাই এদেশের সর্বনাশের জন্য লবিস্ট রাখে আর অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে।”
করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।