হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুই মানহানি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি আবার পিছিয়েছে।
Published : 03 Nov 2021, 05:15 PM
বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের আদালত এ বিষয়ে শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৭ নভেম্বর ধার্য করেছে।
এদিন এ আদালতে মামলা দুটির অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন নির্ধারণ করা ছিল। এর আগে ২৫ অক্টোবরও শুনানি পেছানো হয়েছিল।
বিএনপি চেয়ারপারসন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করলে আদালত নতুন তারিখ ঠিক করে দেন।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ভুয়া জন্মদিন পালন এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে পৃথক দুটি মানহানি মামলা হয়েছে।
খালেদার আইনজীবি মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি দলীয় প্রধান অসুস্থ। তার পক্ষে আদালতে এসে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়।
এ জন্য তিনি আরও সময়ের আবেদন করেন।
বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসন বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ অগাস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম একটি মানহানির মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে ১৯ ও ২২ অগাস্ট দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মেট্টিক পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ সাল। ১৯৯১ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯ আগস্ট ১৯৪৫ সাল। তার বিবাহের কাবিননামায় জন্মদিন ৪ আগস্ট ১৯৪৪ সাল। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ৫ আগস্ট ১৯৪৬ সাল।
মামলায় বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে তার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ অগাস্ট জন্মদিন পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ অগাস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছেন। শুধু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য তিনি ওইদিন জন্মদিন পালন করেন।
অপরদিকে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি’ ঘটানোর অভিযোগে আদালতে অপর মানহানির মামলা দায়ের করেন।
সেই মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী ‘যুদ্ধাপরাধী দল’ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি রাজাকার-আলবদর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের বাড়ি-গাড়িতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
মামলা হওয়ার পর আদালত এসব অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে তেজগাঁও থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছিল। পরের বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি ওই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মশিউর রহমান ‘অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে’ জানিয়ে প্রতিবেদন দেন।
২০১৮ সালের ৩১ জুলাই দুটি মামলাতেই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ খালেদা জিয়াকে জামিন দেন।