দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ‘বিএনপির হাত ধরেই’ চালু হয়েছিল মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ওই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার।
Published : 14 Oct 2020, 05:32 PM
বুধবার সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “এদেশে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি পঁচাত্তরের পর বিএনপির হাত ধরে চালু হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনা এদেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে বিচারের সংস্কৃতি চালু করেছেন। এখন কোনো অপরাধী অপরাধ করে ছাড় পায় না। অপরাধী যত প্রভাবশালী বা দলীয় পরিচয়ের হোক কাউকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেহাই দেননি।”
বিএনপির শাসনামলে বিচার না হওয়ার নজির তুলে ধরে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার তারা করেনি এবং খুনিদের বিচার যাতে বন্ধ করা যায় সেজন্য তারা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আমাদের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করে খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিল। তখন হয়নি জেল হত্যার বিচারও। বিচার বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
“২০০১ সালে নারী নির্যাতনের রেকর্ড করে বিএনপি সরকার। পূর্ণিমা, রহিমা, ফাহিমাসহ হাজারো নারী নির্যাতিত হয়েছে। তারা বিচার করেনি। সংখ্যালঘু নির্যাতনের মাত্রা ও ধরন সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছিল। ২০০৪ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চালোনো হয় গ্রেনেড হামলা। বিচার তো করেইনি, বরং পদে পদে বাধাগ্রস্ত করেছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হত্যাকাণ্ড চালানো এবং বিচারের পথ বন্ধ করার জন্য বিএনপি অপারেশন ক্লিন হার্টে যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের বিচার বন্ধেও সংসদে ইনডেমনিটি দিয়েছিল।”
ধর্ষণের শাস্তিতে বিদ্যমান আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করার মধ্য দিয়ে সরকার কঠোর মনোভবের প্রতিফলন ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার সরকার আবারও প্রমাণ করেছে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। আইনের বিধান কঠোরভাবে কার্যকর করলে অপরাধীরা ভয় পাবে এবং এ সকল ঘৃণ্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসবে। পাশাপাশি এই সমাজের সকল স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সকল অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দান থেকে বিরত থাকতে হবে। তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের পথও চিরতরে বন্ধ করতে হবে।”
যে কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে সরকার আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে দাবি করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশে-বিদেশে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ, রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। উদ্দেশ্যমূলক গুজব ছড়াচ্ছে।”
আহ্বান জানিয়ে তিনি বলে, “আমি দেশবাসীকে এই স্বার্থান্বেষী মহলের এ সকল উদ্দেশ্যমুলক অপ্রপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান এবং সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি। প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করেই মূলত তারা অপপ্রচার করছে। নষ্ট করছে দেশের ভাবমুর্তি।”
শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “করোনা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় বাড়ছে, বাড়ছে প্রবাসী আয়। দেশের অর্থনীতি করোনার নেতিবাচক প্রভাব থেকে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।
“শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছে বিশ্ব মহল। দেশ যখন এগিয়ে যায় তখন একটি মহল দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কিন্তু দেশের জনগণ শেখ হাসিনার সাথে রয়েছে, তার নেতৃত্বের ওপর মানুষের আস্থা রয়েছে।”