জাতীয় পার্টির মহাসচিবের পদে ফিরলেন বাবলু

আবারও মহাসচিব পরিবর্তন হল জাতীয় পার্টিতে; মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে সরিয়ে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে এই পদে ফিরিয়ে আনলেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2020, 01:58 PM
Updated : 26 July 2020, 03:22 PM

কো চেয়ারম্যান বাবলুকে মহাসচিব পদে ফিরে আসার কথা রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সুনীল শুভ রায়।

তিনি বলেন, “আজকে ( রোববার) দুপুরে এ সিদ্ধান্ত এসেছে। তবে মহাসচিব পদে কেন এ পরিবর্তন এসেছে, তা আমি জানি না।”

মহাসচিব পরিবর্তনের বিষয়ে দলের কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় বলেন, “এ বিষয়ে চেয়ারম্যান বলতে পারবেন। কিছু জানি না আমি। তবে শুনেছি, মহাসচিব পরিবর্তন হয়েছে।”

জি এম কাদেরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারম্যান তার ক্ষমতাবলে মহাসচিব পরিবর্তন করতে পারেন। দলটির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের সময়ে এর যথেচ্ছ প্রয়োগ দেখা গিয়েছিল।

এরশাদ জীবিত থাকাকালে ২০১৪ সালে মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়েছিলেন নিজের ভাগ্নিজামাই বাবুলকে। সে দায়িত্বে তিনি ছিলেন ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে বাবলুকে মহাসচিব করেছিলেন এরশাদ। আবার বাবলুকে সরিয়ে ফের রুহুল আমিন হাওলাদারকে ওই পদে বসিয়েছিলেন তিনি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠলে আবার হাওলাদারকে সরিয়ে রাঙ্গাঁকে মহাসচিব করেন এরশাদ।

মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।

এরশাদের মৃত্যুর পর দেবর জি এম কাদেরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব যখন এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদের বিরোধ চলছিল, তখন রাঙ্গাঁকে মহাসচিব করে কমিটি ঘোষণা করেছিলেন রওশন।

পরে তাদের বিবাদ মিটমাট হলে রাঙ্গাঁ কাউন্সিলেও মহাসচিব পদে টিকে যান।

সম্প্রতি নানা মন্তব্যের জেরে রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচিত হচ্ছিলেন রাঙ্গাঁ। দলের শীর্ষ নেতারা সংসদেও তার সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন।

এদিকে এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদের সঙ্গে ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলছে জি এম কাদেরের। এর মধ্যে রাঙ্গাঁকে উদ্ধৃত করে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র বলেছে, বিদিশা রাজনীতিতে এলে তাতে সমস্যা দেখছেন না রাঙ্গাঁ।

এর পরপরই রাঙ্গাঁকে মহাসচিবের পদছাড়া করা হল।

খবরটি গণমাধ্যমেই দেখেছেন জানিয়ে রাঙ্গাঁ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কোনো চিঠি আমি পাইনি। আমি টিভিতে নিউজ দেখলাম, পত্রিকার নিউজ দেখছি। তার মানে তো সত্যতা আছে।”

জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী সভাপতিমণ্ডলীর সভা করে দলের পদ-পদবীর পরিবর্তন আনতে হয়। আবার একই গঠনতন্ত্রের ২০ ধারার ক উপধারায় বলা হয়েছে, দলের চেয়ারম্যান প্রয়োজন মনে করলে তার একক ক্ষমতাবলে দলের পদ-পদবীতে পরিবর্তন আনতে পারবেন।

এ বিষয়ে রাঙ্গাঁ বলেন, “আজকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এটা অগণতান্ত্রিক। আমাদের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। দলের কাউন্সিল করে আমাকে তিন বছরের জন্য দলের মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করা হল। এখন বলা হচ্ছে, আমি আর মহাসচিব নাই।

“এখন সময় এসেছে, আমাদের গঠনতন্ত্রের ২০ ধারাটি উঠিয়ে দেওয়ার। এখন যদি কেউ মনে করে, এটা ব্যক্তি ভালোবাসায় দল পরিচালনা করা হবে, তাহলে আমরা রংপুরের মানুষদের নিয়ে দল গঠন করব।”

বিদিশা এরশাদের সঙ্গে তার রাজনৈতিক সখিতার বিষয়ে যে আলোচনা চলছে, পদচ্যুতিতে তা প্রভাব রেখেছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে এখন কিছু বলব না।”