ধরা পড়েছিল আগেই, সরকার চেপে রেখেছিল: ফখরুল

বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা আগেই শনাক্ত হলেও মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সরকার এতদিন খবরটি গোপন রেখেছিল বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2020, 12:22 PM
Updated : 9 March 2020, 12:23 PM

রাজধানীতে সোমবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে কোভিড-১৯ নামে নতুন এ রোগ প্রতিরোধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি বলেও বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ তুলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের সরকার এই করোনাভাইরাস নিয়ে এতোদিন কোনো কিছুই বলেনি এবং তারা খুঁজেও পায়নি। কী কারণে খুঁজে পায়নি জানি না। হঠাৎ করে কালকে খোঁজে পেয়েছে। এটা কী এমন যে যখন বিদেশি অতিথিরা আসতে অপরাগতা প্রকাশ করলেন তখনই এই তিন জনের নাম আসল? আমি জানি না।

“তবে আমার ধারণা, তারা পুরো জিনিসটাকে গোপন করার চেষ্টা করেছে। আমাদের এই রোগ বাংলাদেশে অনেক আগেই এসেছে বলে অনেকেরই ধারণা এবং সেই ধারণাগুলো সত্যিকার অর্থে এখন প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।”

গত ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, যা ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ১০০ দেশ ও অঞ্চলে। বিশ্বজুড়ে ১ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ এ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন; মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৫ জনের।

এর মধ্যে রোববার বিকালে বাংলাদেশে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর। আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন ইতালির দুটি শহর থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। তাদের একজনের সংস্পর্শে আসায় পরিবারের এক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।

আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, তাদের সবার অবস্থাই স্থিতিশীল। তিনজনকেই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এরপর সন্ধ্যায় আগামী ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড স্কয়ার অনুষ্ঠেয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কাটছাঁটের ঘোষণা আসে। সেদিন ছোট আকারে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হবে।

ওই অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কদের আমন্ত্রণ করেছিল সরকার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা মনে করি যে, এই বিষয়ে যথাযথ যেসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেই ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়নি।

সকল বন্দরে পর্যাপ্ত ‘স্ক্যানিংয়ের’ ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

“একইসঙ্গে এই রোগের ট্রিটমেন্টের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া দরকার যাতে করে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হতে পারেন। আমরা মনে করি যে, এটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের লেখা ‘প্রগতি ও সত্যের সন্ধানে’ ও ‘মূল্যবোধ ও অবক্ষয়ের খণ্ডচিত্র’ নামে দুটি বইয়ের প্রকাশনা উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এ অনুষ্ঠান হয়। ‘দি ইউনিভার্সেল একাডেমি’ বই দুটি প্রকাশ করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে লেখক ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুসতাহিদুর রহমান, দি ডেইলি ফাইন্যান্সিয়াল হেরাল্ডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেস প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ ও প্রকাশক শিহাব উদ্দীন ভুঁইয়া বক্তব্য দেন।