বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, খুনিরা সরকারের আশ্রয়ে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।
Published : 26 Oct 2019, 03:13 PM
আবরার হত্যার প্রতিবাদে শনিবার ঢাকার নয়া পল্টনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সমাবেশে একথা বলেন তিনি।
“খবরের কাগজে বেরিয়েছে, এই আওয়ামী লীগের আমলে ৩৪/৩৫ জন হত্যাকারী, যাদের ফাঁসি হয়েছে, তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পেয়েছে। অর্থাৎ অপরাধীরা প্রটেকশন পায় সরকারের কাছ থেকে।”
রিজভী বলেন, “বিশ্বজিতকে যারা হত্যা করেছে, তাদেরও কিন্তু কিছু হয়নি। একের পর এক খুন, একের পর এক হত্যা, এই হত্যার সাথে এই সরকার দলীয় যারা জড়িত, তারা কোনো না কোনোভাবে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।”
মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, “বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার। যে প্রদীপ জ্বলে উঠার আগেই এই স্বৈরাচারী সরকার তাকে নিভিয়ে দিল তার ছাত্রলীগ বাহিনী দিয়ে।
“যারা হত্যা করেছে, এই হত্যাকারীদের শুধু ধরলেই হবে না, তাদের প্রত্যেককে দৃশ্যমান ফাঁসি দিতে হবে। হত্যাকারীর পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যদের আমি বিচার চাই। কারণ যারা এই সন্তানদের জন্ম দিয়েছে, লালন-পালন করেছে, অবশ্যই তারা দায়-দায়িত্ব রাখে।”
দুর্নীতিবাজদের ধরতে সরকারের চলমান অভিযানের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “আজকে হঠাৎ করে টাকার খনি, ডলারের খনি, ক্যাসিনোর খনি। ১০ বছর কিছুই হল না, এখন হচ্ছে কেন? এ নিয়ে জনমনে বড় বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
“কেউ বলেন গৃহ বিবাদ, কেউ বলেন অন্য কোনো বিষয় আছে। আমরা এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। আমরা বলতে চাই, দুর্নীতি করা নিশ্চয় অপরাধ। সবচাইতে বড় দুর্নীতি হচ্ছে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে দিনের ভোটকে রাতে করা। এই মহাদুর্নীতির বিচার আগে হওয়া উচিৎ।”
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে রিজভী বলেন, “তার এই চরম শারীরিক অবস্থার জন্য দায়ী আজকের প্রধানমন্ত্রী, তার ক্ষোভ, তার প্রতিহিংসা। তার রাষ্ট্রক্ষমতায় ভোগ দখলের জন্য আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ধুকে ধুকে জেলখানায় আছেন।
“দেশনেত্রী হাসপাতালে আছেন, তার চিকিৎসা নাই। তার আত্মীয়-স্বজনরা বলছেন, দেশনেত্রী মুক্ত হলে তিনি সিদ্ধান্ত নেবে। তারা দেশের বাইরে নিয়ে যাবে, দেশের মধ্যে বা বাইরে যেখানে উন্নতমানে চিকিৎসা হয় তারা করাবেন। পরিবারের এই আকুতি আজকে সরকারের কানে ঢোকে না।”
আফরোজা আব্বাস বলেন, “গণতন্ত্রের অপর নাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজকে তিনি কারাগারে মানে গণতন্ত্র কারাগারে। তাকে অবশ্যই আমাদের মুক্ত করে আনতে হবে।”
সংগঠনের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের পরিচালনায় এই সমাবেশে মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান ও পেয়ারা মোস্তফা বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল বেরিয়ে নয়া পল্টন থেকে নাইটেঙ্গল মোড় হয়ে বিএনপি কার্যালয়ে ফিরে শেষ হয়।