সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত না হলে জাতীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Published : 22 Mar 2017, 09:59 PM
বুধবার বিকালে এক আলোচনা সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নির্বাচন আপনি করবেন, তার জন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্বাচনের জন্য আমাদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। সভা-সমিতি করার, গণতান্ত্রিক রাজনীতি করার, কাজ করার সমস্ত কিছু আমাদের ফেরত দিতে হবে।”
বর্তমানে দেশে যে অবস্থা চলছে সে অবস্থায় নির্বাচন হতে পারে না মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, তাহলে নির্বাচন হবে, তা না হলে নির্বাচন হবে না।”
‘গণতান্ত্রিক’ দল হিসেবে বিএনপি নির্বাচন চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পাঁচবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসেছি। আবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যেতে চাই।
“তবে সেটা অবশ্যই নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় হতে হবে। অন্যথায় অন্য কোনো নির্বাচন এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।”
কে এম ওবায়দুর রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব। ওবায়দুর রহমান বিএনপির মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
‘নতুন কৌশল জঙ্গিবাদ’
সরকার এখন নতুন রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আশকোনায় র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর যুবকের মৃত্যু নিয়ে ফখরুল বলেন, “বলল যে, হার্ট অ্যাটাক হয়ে সে মারা গেছে। কিন্তু দেখা গেল যে, সে ব্যবসায়ী, ওরস থেকে ফিরছিল। সেখান থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে এসে টাকা-পয়সা চেক লিখে নিয়েছে। তারপর বলেছে সে মারা গেছে।
“এদিকে আত্মঘাতী হিসেবে যার নাম বলছে, পত্রিকা অফিসে গিয়ে সে বলছে, আমি তো সেই ব্যক্তি নই। আমি বেঁচে আছি তো। সে বলছে, আমি তো মরিনি।”
জঙ্গিবাদ নিয়ে সরকার খেলছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকার যদি সত্যিকার অর্থে জঙ্গিবাদকে খুঁজে বের করতে চান, তাহলে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐক্য সৃষ্টি করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আপনারা এটা করবেন না এজন্য যে জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন।”
ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি করার আগে তা দেশবাসীর সামনে প্রকাশের দাবি তুলে এই বিএনপি নেতা বলেন, জনগন সমর্থন দিলেই ওই চুক্তি করা যাবে।
“অন্যথায় দেশবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী কোনো চুক্তি জনগণ মেনে নেবে না।”
কে এম ওবায়দুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার’ সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারেআহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রয়াত নেতার মেয়ে শামা ওবায়েদ, সংগঠনের সভাপতি টি এম গিয়াস উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।