ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাঁধে ভর করে বিএনপি গোলযোগ সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ।
Published : 23 Apr 2016, 07:13 PM
শনিবার তৃতীয় ধাপের ইউপি ভোটের পর বিকালে ঢাকার ধানমিন্ডতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
নবম ইউপি নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে শনিবার সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৪৮টি জেলার ৬১৪টি ইউপিতে ভোট হয়। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে এবারই প্রথম চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে।
তৃতীয় ধাপের এ ভোটে গোলযোগ-সংঘর্ষ আগের দুই ধাপের তুলনায় কম হলেও অনিয়ম অব্যাহত থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার।
বিএনপি ইউপি নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে শুরু থেকেই একে ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ হিসেবে নেয় অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলনে হানিফ বলেন, “নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী বাছাইয়ে, মনোনয়ন প্রদানে তাদের কোনো আগ্রহ নেই।
“যেহেতু বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছে, তাই বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকে। তাই তাদের কাঁধে ভর করে বিএনপি গোলযোগ সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে।”
শনিবার ৫৫২৬টি কেন্দ্রে ভোট হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “এতগুলো কেন্দ্রের মধ্যে দুয়েকটি স্থানে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এটি খুবই নগণ্য।
“প্রধানমন্ত্রী কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়ার পর তৃতীয় ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
অবশ্য ইউপিতে তৃতীয় ধাপের এ ভোটেও ব্যাপক অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ তুলে বিএনপি বলেছে, সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাস দেওয়া নির্বাচন কমিশন এবারও ‘সাক্ষী গোপালের’ ভূমিকা পালন করেছে।
স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে তৃণমূলের এই নির্বাচন এবার ছয় ধাপে হচ্ছে। গত ২২ মার্চ ও ৩১ মার্চ প্রথম দুই ধাপের ভোট শেষ হয়েছে। ২৩ এপ্রিলের পর আরও তিন ধাপের ভোট বাকি রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ চক্রান্তে’ এফবিআই কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার মামলার বিচারে তার ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে বলে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে দাবি তুলেছেন সে প্রসঙ্গও আসে সংবাদ সম্মেলনে।
এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, “এ অভিযোগ আমরা তুলিনি। এফবিআই-এর তদন্তে বেরিয়ে এসেছে মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমানের নাম। তার বাসা থেকে এফবিআই-এর কাগজ পাওয়া গেছে। তিনি এ ষড়যন্ত্রে জড়িত না থাকলে তার বাসায় এসব থাকবে কেন?”
“তদন্ত সাপেক্ষে তথ্য যখন বেরিয়ে আসছে, আইনের আওতায় যখন তারা এসেছে, তখন বিএনপি নেতারা জনগণেল দৃষ্টি ঘুরাতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তবে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই- এর সাথে বিএনপির আর কে কে জড়িত, তাদের বের করা হবে। প্রমাণ হলে সাজা প্রদান করা হবে। যেন পরে আর কেউ এমন কিছু করার দুঃসাহস না দেখা “, বলেন তিনি।
নির্বাচনে কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্ব কমিশনের না- একজন নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, “এটি সঠিক না। কেন্দ্রের ভেতর-বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব তাদের।”
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ ধরনের ঘটনা আমরা সমর্থন করি না। আমরা চাই- সব পেশাজীরীরা নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করুক।
“আমরা বিষয়টি খোঁজ নিব। যদি কাউকে কেউ হয়রানি করে থাকে, তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাব ব্যবস্থা নিতে।”
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বাহাউদ্দীন নাসিম ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।