কারাগারে বিএনপি নেতারা ‘সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না’, অভিযোগ প্রিন্সের

“হাজার হাজার নেতাকর্মীকে বন্দি করায় বর্তমানে কারাগারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে,” বলছেন এই বিএনপি নেতা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2022, 11:08 AM
Updated : 23 Dec 2022, 11:08 AM

বিএনপির কারাবন্দি জ্যেষ্ঠ নেতারা অসুস্থ হলেও সেখানে ‘সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না’ বলে অভিযোগ তুলেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

শুক্রবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি গ্রেপ্তার নেতাদের জামিন ও মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

প্রিন্স বলেন, কারাবন্দি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সিনিয়র নেতারা দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। অনেকে একাধিকবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

“বর্তমানে গায়েবী মামলায় কারাবন্দি এই বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের সুচিকিৎসায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। তারা কারাগারে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা।”

কারাগারে ‘অনেক’ বিএনপি নেতাকে ডিভিশন দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে প্রিন্স বলেন, “হাজার হাজার নেতাকর্মীকে বন্দি করায় বর্তমানে কারাগারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কারাবিধি অনুযায়ী অনেক নেতা ডিভিশন পাওয়ার অধিকারী হলেও অনেককে এখনো ডিভিশন দেওয়া হয়নি।

“কারাবন্দি নেতাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আবদুস সালাম, রহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাক মিয়াসহ সিনিয়র নেতারা জামিন পাওয়ার অধিকারী হলেও বারবার তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হচ্ছে। সরকারের নির্দেশে তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আমরা অবিলম্বে মহাসচিবসহ বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করছি।”

ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের তিন দিন আগে গত ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে সংঘর্ষ হলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। চার শতাধিক নেতাকর্মীকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন রাতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এমরান সালেহ প্রিন্স সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, “কারাগারে নেতৃবৃন্দের প্রতি যে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, সেটা অতীতে কখনো দেখা যায় নাই। কারাবিধি অনুযায়ী তাদেরকে দিনের বেলা লকআপ খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ২৪ ঘণ্টা তাদের লকআপের ভেতরে রাখা হচ্ছে এবং লকআপের ভেতরেও তাদেরকে মানসিক নির্যাতনের মধ্যে রাখা হচ্ছে বলে তাদের আত্মীয় পরিজনদের মাধ্যমে আমরা শুনতে পাচ্ছি।

“এমনকি অনেক নেতৃবৃন্দের সাথে যখন তাদের আত্মীয়-স্বজনরা দেখা করতে যান, তাদের কল দেওয়া হলে তাদেরকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এগুলো কারাবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং একই সাথে মানবাধিকার ও সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে আমরা মনে করি।”

গাজীপুরে প্যারোলে মুক্ত বিএনপি নেতা আলী আজম খানকে ডাণ্ডাবেরি ও হাতকড়া পরিয়ে তার মায়ের জানাজায় নেওয়ার ঘটনাকে ‘বেআইনি, নজিরবিহীন, সংবিধান ও মানবাধিকার পরিপন্থি হিসেবে বর্ণনা করেন প্রিন্স।

সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দাবিতে ঢাকা বাদে সারাদেশে শনিবার গণমিছিল কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে শিরিন সুলতানা, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, মীর নেওয়াজ আলী, তাইফুল ইসলাম টিপু, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, আমীরুজ্জামান শিমুল, শেখ রবিউল ইসলাম রবি, মশিউর রহমান বিপ্লব সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।