“কোনো দেশে বৈষম্য যদি বহুদিন ধরে চলে- তখন সেসব দেশে শুধু উন্নয়নই নয়, সামাজিক কাঠামো দুর্বল হয়ে যায়,” বলেন বিরোধী দলীয় নেতা।
Published : 02 Nov 2023, 10:01 PM
একাদশ সংসদের শেষ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ।
আর দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংলাপের উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তন হতে হবে। সে নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক।
দেশের স্বার্থ রক্ষায় সবার ঐক্য চেয়ে তিনি বলেন, “ভূ-রাজনীতির খেলায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্যও সচেষ্ট রয়েছে বিশ্বের দেশগুলো। ইস্যুগুলো এতটাই স্পর্শকাতর যে, দেশের স্বার্থ রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য না থাকলে একটা বিপজ্জনক অবস্থায় পড়ার আশঙ্কা থাকে।”
জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্য না থাকলে একেক রাজনৈতিক দল একেক রাষ্ট্রকে সমর্থন করবে। এটা আমাদের সবার জন্য বিপদ ডেকে আনবে।”
অতীতের যে কোনো সংসদের তুলনায় দশম ও একাদশ সংসদ ‘অনেক’ কার্যকর মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিরোধী দল সংসদে শুধু সরকারের বিরোধীতা করেনি। সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা এবং মন্দ কাজের সমালোচনা করেছে।”
বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদ সকল রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। সংসদকে প্রাণবন্ত অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর করতে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল সবসময় আন্তরিক এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
দেশে উন্নয়ন হলেও সবাই এর ‘ভাগীদার’ হতে পারেনি মন্তব্য করে রওশন বলেন, “কোনো দেশে বৈষম্য যদি বহুদিন ধরে চলে- তখন সেসব দেশে শুধু উন্নয়নই নয়, সামাজিক কাঠামো দুর্বল হয়ে যায়। দেশে আঞ্চলিক বৈষম্য বেড়ে চলেছে। উন্নয়নের সঙ্গে বৈষম্যও বাড়ছে।”
সংলাপে তাগিদ জাপা মহাসচিবের
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংলাপের তাগিদ দিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “জাতির পিতার কন্যা হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর অনেক দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করবো কে কী বলল, কী সমালোচনা করল- এগুলোর ঊর্ধ্বে উঠে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের বিষয়ে এক টেবিলে আলোচনা করার জন্য উদাত্ত কণ্ঠে আহ্বান জানাই, দেশের মানুষ এ জিনিসটা চাইছে।”
বিএনপির উদ্দেশে চুন্নু বলেন, “মাঠে যে আছে বিএনপিসহ… তাদেরকে বলব, আপনারাও আল্লাহরস্তে জনগণের দিকে তাকিয়ে শর্ত বাদ দিয়ে, পূর্বশর্ত না করে শর্তগুলো টেবিলে এসে আলোচনা করেন।”
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
সেই প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, “এগুলো সহ্য হয় না। এ আন্দোলনের কারণে বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষও মারা গেছে। এটাও গ্রহণযোগ্য না।
“আবার রোববার-সোমবার রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছেন। মানুষ আতঙ্ক ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন।”