Published : 03 Oct 2024, 11:11 PM
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে রূপনগর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গফুর মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তার হেফাজত থেকে আট রাউন্ড গুলিসহ একটি শটগান উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, এই অস্ত্র দিয়েই গত ২০ জুলাই আন্দোলনে গুলি ছোড়েন গফুর।
বৃহস্পতিবার ভোরে রূপনগরের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মাকছেদুর রহমান।
তিনি বলেন, “মিরপুর-১০, পল্লবী প্রশিকার মোড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র হামলা ও নির্বিচারে গুলি চালায়। গত ২০ জুলাই বিকালে প্রশিকার মোড়ে এ হামলায় শামীম হাওলাদার নামে একজন ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর ভিকটিমের চাচাতো ভাই সম্রাট হাওলাদার রুপনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।”
ঘটনাস্থলের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় পাওয়া ফুটেজ পর্যালোচনা করে গফুর মোল্লাকে শনাক্ত করার কথা জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
উপকমিশনার মাকছেদুর বলেন, গফুর মোল্লা তার নামে লাইসেন্সকৃত শটগানের জন্য ২০০১ সালে ৫০টি, ২০০৬ সালে ২৫টি এবং ২০১৩ সালে ২৫টি মোট ১০০টি গুলি কেনেন। রূপনগর থানা পুলিশ তার কাছে থেকে ৮টি অক্ষত গুলি এবং একটি ব্যবহৃত কার্তুজ উদ্ধার করে।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বাকি ৯২টি গুলির বিষয়ে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি গফুর। তিনি গুলি ব্যবহার বা হারানো সংক্রান্ত থানায় জিডিও করেননি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গফুর এই ৯২টি গুলি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান উপকমিশনার মাকছেদুর।
মিরপুর-১০ বাসস্ট্যান্ডের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাছে গত ৪ আগস্ট ইমন হোসেন আকাশ নামে একজনের প্রাণহানির ঘটনায় পল্লবী থানায় করা একটি হত্যা মামলায়ও গফুর মোল্লা আসামি।
সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এনামুল হক আবুলকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানান ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, “এনামুল হক আবুল পল্টন থানা, যাত্রাবাড়ী থানা ও রমনা মডেল থানার ৩টি মামলার আসামি।”
আন্দোলনে হামলার এক ‘ইন্ধনদাতা’ গ্রেপ্তার
চাঁদাবাজির অভিযোগে ঢাকার উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর থেকে বুধবার ইমরান হোসেন সুলতান নামে একজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, সুজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ইন্ধনদাতা।
তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় গত ৫ অগাস্ট হামলার ইন্ধনের অভিযোগে একটি মামলা রয়েছে।
তুরাগ থানার ওসি আহাদ খান বলেন, “বুধবার মেহেদী হাসান নামে এক ব্যবসায়ী মামলায় অভিযোগ করেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সুলতান। পরদিন উত্তরা দক্ষিণ মেট্রো স্টেশন এলাকায় তার উপর হামলা করে আহত করে।”
গোয়েন্দা তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ ঘটনায় সুলতানকে শনাক্ত করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে উত্তরা ১৭ নম্বরের বৃন্দাবন ও আশপাশের এলাকায় রাজউকের জমিতে অবৈধভাবে দোকান ও বস্তিঘর তৈরি করে ভাড়া আদায়, বস্তিঘরে বিদ্যুতের সংযোগ, গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি সংযোগ দিয়ে অর্থ আদায়, অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের গ্যারেজ বানিয়ে ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।”