সরকারবিরোধী আন্দোলনে বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম গড়তে তুলতে বিএনপি গত ২৪ মে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।
Published : 24 Jul 2022, 09:12 PM
সরকার পতনে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে সম্মিলিতভাবে আন্দোলন নামতে একমত হয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
রোববার বিকালে আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডির সঙ্গে দেড় ঘণ্টার সংলাপ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
উত্তরা ৩ নম্বর সেকটরে আ স ম আবদুর রবের বাসায় এই সংলাপ হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা একমত হয়েছি, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করেই আমরা সম্মিলিতভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাদের পতন ঘটাব। আওয়ামী লীগ সরকার থাকলে আমরা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না।
“শুধু তাই নয়, আমরা এক সাথে, এক জোটেই কাজ করব, যাতে আমরা এই সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থেই জনগণের কাছে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারি - সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করতে একমত হয়েছি।”
তিনি বলেন, “আমাদের এই ঐকমত্য শুধু নির্বাচন নয়, আমরা যেন রাষ্ট্রের একটা আমূল পরিবর্তন করতে পারি। মানুষের সামনে একাত্তর সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবার জন্য আমরা যৌথভাবে সেই কাজ করার চিন্তা করেছি, সেইভাবে কাজ করব।
“আমরা মনে করি, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ঐক্য গড়ে উঠবে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতই বলে দেবে, আমাদের জনগণ বলে দেবে যে, আমরা কোন পথে এগুবো? আন্দোলনের ধারা কী হবে? আন্দোলনের গতি কী হবে?”
আ স ম রব বলেন, “এবারের আন্দোলনের লক্ষ্য হবে একই সাথে স্বৈরাচারী সরকারের পতন, নিপীড়নমূলক অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উচ্ছেদ, শাসনতন্ত্র পরিবর্তন। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নয়, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমরা মাঠে নামব। মাঠে জনগণ থাকবে, তারাই ডিকটেট করবে আমরা কোথায় যাব?”
তিনি বলেন, “আজকের এই আলোচনায় আমরা ২১ দফা দাবিনামা নিয়ে কথা বলেছি। জাতীয় রাজনীতির প্রয়োজনে আন্দোলনের স্বার্থে আমাদের এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। ২০১৮ সালে আমরা একসাথে আন্দোলন করেছি। এবার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জাতীয় সরকারের একটা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।”
সংলাপে সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে জেএসডির চার সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও সহসভাপতি তানিয়া রব।
বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমদু টুকু ও মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন স্বপন।
সরকার বিরোধী আন্দোলনে বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম গড়তে তুলতে বিএনপি মহাসচিব গত ২৪ মে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন।
প্রথম দফায় মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, জোনায়েদ সাকির গণসংহতি আন্দোলন, সাইফুল হকের বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেন তিনি।
এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ন্যাপ-ভাসানী, মুসলিম লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, সাম্যবাদী দল, ডেমোক্রেটিক দলের সঙ্গেও সংলাপ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।