শহীদ মিনারে ‘ইচ্ছাকৃত’ সময় নষ্ট করেছে কেউ কেউ, অভিযোগ মোশাররফের

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর আগে পাঁচ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে বলে এ বিএনপি নেতার ভাষ্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2023, 11:34 AM
Updated : 21 Feb 2023, 11:34 AM

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিএনপি ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার’ শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

মঙ্গলবার দুপুরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, “আমরা সাড়ে ৭টার দিকে বলাকা ভবন থেকে প্রভাতফেরি নিয়ে গেলে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সামনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।

মোশাররফ বলেন, “কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম এখানে বারবার উচ্চারণ করা হয়েছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেদী ত্যাগ করেনি, অযথা সময় নষ্ট করেছে। বিষয়টি এখানে দায়িত্বরত পুলিশ-প্রশাসনের ব্যর্থতা। মহান ভাষা দিবসেও এখানে দলবাজি হয়েছে, এটা দুঃখজনক।”

ভাষা আন্দোলনে মু্ক্তিযুদ্ধের বীজ বপন করা ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ভাষা আন্দোলনের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এক। এর চেতনা ছিল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ; এদেশের জনগণ নিজের হাতে ভোট দিয়ে নিজেদের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করবে, সেই দল জনগণের সেবা করবে, দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকবে না, সামাজিক সাম্য থাকবে।”

তবে বর্তমানে যারা সরকারে রয়েছে, তারা এদেশের গণতন্ত্রকে ‘হত্যা করেছে’ বলে মন্তব্য করেন মোশাররফ।

তিনি বলেন, “বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তরে তারা এদেশে সকল দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছে। সে দলের নেতারা বলে, তারা নাকি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে নাই, কিন্তু সেই দলের লোকজন বাকশাল কায়েম করেছে, আওয়ামী লীগও তখন বাতিল ছিল, আমাদের বিএনপি তখনও প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি।”

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দরখাস্ত করে বাকশালে যোগ দিয়েছিলেন- ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে মোশাররফ বলেন, “এ ব্যাপারে আমাদের জানা নেই। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে আপনারা জানেন, নানাভাবে ইনিয়ে বিনিয়ে এদেশের বহু অপপ্রচার তিনি করেন।”

এ সময় বর্তমান রাজনেতিক প্রেক্ষাপট এবং বিএনপির আন্দোলন নিয়েও কথা বলেন দলটির স্থায়ী কমিটির এই নেতা।

তিনি বলেন, “আমাদের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা- গণতন্ত্র, সেই গণতন্ত্র যেখানে থাকে না, সেখানে মানবাধিকার থাকে না, আজকে দেশে মানবধিকার নেই। লুটপাট, দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায়।

“সারাদেশে জনগণ আওয়াজ দিয়েছে, রায় দিয়েছে- যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, যারা অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, যারা বিচার বিভাগ কুক্ষিগত করেছে, তারা এ দেশকে মেরামত করতে পারবে না। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আজ দেশের মানুষ বিপন্ন, এ সরকার থেকে জনগণ মুক্তি চায়। অবৈধ সংসদ বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।”

এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুস্পস্তবক অর্পন করে বেদীমূলে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।

খন্দকার মোশাররফের নেতৃত্বে নজরুল ইসলাম খান, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্যামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর নেওয়াজ আলী, হারুনুর রশীদ, তাবিথ আউয়াল, মফিকুল হাসান তৃপ্তি, সেলিম রেজা হাবিব, শামীমুর রহমান শামীম, আকরামুল হাসান, রফিক শিকদার, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মুনায়েম মুন্না, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, এসএম জিলানী, হাসান জাফির তুহিন, হেলেন জেরিন খান, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আবুল কালাম আজাদ, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।