‘গোঁজামিলের’ বাজেট এটি: ফখরুল

টিআইএন থাকলেই দুই হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাবের সমালোচনাও করেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2023, 02:26 PM
Updated : 2 June 2023, 02:26 PM

চলমান অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে প্রস্তাবিত বাজেটে ‘কোনো দিক নির্দেশনা’ নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আবারও ‘গোঁজামিল’ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া জানান।

তার ভাষ্য, “যে ভয়ংকর মূল্যবৃদ্ধি, যে ভয়ংকর অর্থনৈতিক সংকট- সেই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যে বাজেট দরকার ছিল সেই বাজেট দিতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আবারও ওই গোঁজামিল।

“দুইয়ে দুই চার হয়, এক-দুই-তিন একটা করে দিয়ে বানিয়ে দিয়েছে। কীভাবে টাকা আসবে, কোত্থেকে টাকা আসবে, কীভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে তার সম্পর্কে কোনো রকমের সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা নাই।”

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেখানে তিনি গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রেখে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন।

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে একটি দৈনিকে প্রকাশিত কার্টুন দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘দেখেন কার্টুনে একজন ভিক্ষুক তার দুই কান কাটা, সে একটা থালা নিয়ে ভিক্ষা করছে। আর তার বুকের মধ্যে একটা বোর্ড লাগিয়ে রেখেছে, তার টিন নম্বর। বুঝতে পারছেন, অর্থাৎ যারা আয়কর বর্হিভূত তাদেরকেও দুই হাজার করে আয়কর দিতে হবে। ভিক্ষা করতে গেলেও এখন টিন নম্বর থাকতে হবে। হিসাব খুলতে গেলেও টিন নম্বর থাকতে হবে।”

বড় মেগা প্রকল্প করতে গিয়ে সরকার এভাবে সাধারণ মানুষের ‘পকেট কেটে’, ‘নিঃস্ব করে’ দিচ্ছে বলেও সমালোচনা করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আজকে চাল-ডাল-তেল-লবণ-পেঁয়াজ-আদা এমনভাবে বেড়েছে দাম যে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

“যে কারণে আজকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাস্তবতা বিবর্জিত একটা বাজেট যার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বাস্তবতার।”

এ সরকার প্রতি মুহূর্তে জাতির ভবিষ্যতকে ‘নষ্ট করছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, এজন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের পরিষ্কার কথা আমি একথা বলিনি যে, বিএনপিকে ক্ষমতায় আনো, আমি একথা বলিনি যে, আমাকে ক্ষমতায় আনো।

‘‘আমরা দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, আমরা একটা অবাধ নির্বাচন চাই। অতীতের অভিজ্ঞতা যে, আমরা বুঝি যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে কখনও নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। এজন্যই দাবি আমাদের একটাই, দয়া করে বিদায় হও।“

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, একেএম আজিজুল ইসলাম, অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম,বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের ফখরুল আলম বক্তব্য রাখেন।