“আরে ব্যবসা-বাণিজ্য চলবেই। ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে একটি দেশের মৌলিক যে অবস্থান, নৈতিক যে অবস্থান, সেই অবস্থানের কোনো সম্পর্ক নাই।”
Published : 17 May 2024, 09:12 PM
বর্তমান সরকার ‘যুক্তরাষ্ট্রের গুডবুকে চলে গেছে’- এ রকম ‘মিথ্যা গল্প’ ফাঁদছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান।
শুক্রবার বিকালে দলের কারাবন্দি স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহসম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের মালিবাগের বাসায় গিয়ে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, “আজকের এই সরকার এমন একটি মানসিক অবস্থায় রয়েছে যে, তারা তাদের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে এবং নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে বলেই তারা বিভিন্ন রকমের গল্প ফাঁদছে।
“গল্প ফেঁদে বলছে যে, তারা আমেরিকান সরকারের গুডবুকে চলে এসেছে। এখানে গুডবুকে আসার ব্যাপার তো নয়।”
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লুর ঢাকা সফর দিয়ে মঈন খান বলেন, “তিনি তো যাওয়ার সময়ে স্পষ্ট ভাষায় একথা বলে গিয়েছেন যে, বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের অবস্থান যে গণতন্ত্র ‘ফিরিয়ে আনতে হবে’, সেই অবস্থান থেকে একটুও সরেনি।”
গণতন্ত্র মানে কী- এই প্রশ্ন রেখে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী বলেন, “জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হবে, জনগণের ভোটের আইনগতভাবে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে, সেই প্রতিনিধি পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনা করবে...এটাই তো গণতন্ত্র। এর বাইরে তো আর কিছু নয়।
“বিশ্বের উদারনৈতিক পশ্চিমা দেশগুলো আমেরিকা-যুক্তরাষ্ট্র বলুন, যুক্তরাজ্য বলুন, কানাডা বলুন, অস্ট্রেলিয়া বলুন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলুন, এমন কি জাতিসংঘ পর্যন্ত একটি কথাই বলেছে যে, বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্র মৃত’।
“তারই ধারাবাহিকতায় সরকার যে গল্প ফাঁদতে চেষ্টা করেছিল যে, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশের র্যাবের ওপরে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, বাংলাদেশের ওপরে যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা আমেরিকা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। আজকে এই মিথ্যা গল্প ফেঁদে কি কোনো লাভ হয়েছে?”
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য নিয়ে মঈন খান বলেন, “আরে ব্যবসা-বাণিজ্য চলবেই। ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে একটি দেশের মৌলিক যে অবস্থান, নৈতিক যে অবস্থান, সেই অবস্থানের কোনো সম্পর্ক নাই।
“আমেরিকা স্বীকার করে নেয়নি যে, বাংলাদেশ সরকার নৈতিকভাবে বাংলাদেশ শাসন করছে। তারা তো স্পষ্ট করে বলেই দিয়েছে, তারা বলেছে যে, ‘এই নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য হয়নি’। এই ‘সাজানো নাটকীয়’ কমিশনের মাধ্যমে যারা জনপ্রতিনিধি, তারা ‘সত্যিকার জনপ্রতিনিধি নন’।”
বাংলাদেশে একদলীয় শাসন কায়েম হয়েছে দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, “এখানে মিথ্যা-ভুয়া-নাটকীয় নির্বাচনের নামে প্রহসনের ভেতর দিয়ে জাতীয় সংসদে সদস্য নির্বাচিত হয়।”
বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি করে না দাবি করে মঈন খান বলেন, “আমরা রাজনীতি করছি বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। আজকে দেশে নারীর অধিকার নেই, এ দেশে শিশুর অধিকার নেই, মানবাধিকার নেই। পদে পদে মানুষ লাঞ্ছিত হচ্ছে।
“অন্য দিকটি দেখুন। দেশের অর্থনীতির কী অবস্থা! মানুষকে আজকে নিঃস্ব করে দেওয়া হচ্ছে। ধনী আর দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান আকাশচুম্বী হয়ে যাচ্ছে। সরকারের পোষ্যরা ধনী হচ্ছে, অর্থ লুটপাট করে পাচার করছে, দেশের অর্থনীতিকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।”
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বিএনপি আন্দোলন করছে বলে জানান মঈন খান।
এর আগে বিএনপি নেতা যাত্রাবাড়ীতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদ্য কারামুক্ত যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীকে দেখতে তার যাত্রাবাড়ীর বাসায় যান।