দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
Published : 04 Nov 2023, 08:43 PM
‘আগুন সন্ত্রাস’ চালিয়ে যারা গর্তে ঢুকেছে, তাদের বের করে এনে শায়েস্তা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যারা আগুন সন্ত্রাস চালাচ্ছে, পুলিশ হত্যা করেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর অনুকরণে হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, আমাদের মা-বোনদের কাপড় ধরে টানাটানি করেছে, আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে এখন যারা গর্তে ঢুকেছে, তাদের গর্ত থেকে বের করে এনে শায়েস্তা করা হবে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপি বলেছিল ২৮ তারিখ ফাইনাল খেলা হবে; কিন্তু তারা খেলার আগেই মাঠ ছেড়ে চলে গেছে। পুলিশ একটা গুলিও ছোঁড়ে নাই, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজেই মির্জা ফখরুল সাহেবসহ সবাই মঞ্চ ছেড়ে চলে গেল আর নেতাকর্মীরাও পেছনে পেছনে চলে গেল।
“অর্থাৎ খেলা শুরু হওয়ার আগেই মাঠ ছেড়ে চলে গেল বিএনপি।”
বিএনপি-জামাত জোটের নেতারা এখন ‘জনশত্রুতে রূপান্তরিত’ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “তারা গাড়িতে আগুন দেয়, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে। ডাকাত ডাকাতি করে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে না। চোর চুরি করে, সে মানুষের বাড়িতে আগুন দেয় না।
“এরা মানুষের সহায় সম্পত্তিতে আগুন দিচ্ছে। এরা জঘন্য ডাকাত এবং জঘন্য সন্ত্রাসীর চেয়েও এরা বেশি জঘন্য। এরা জনগণের শত্রু। গাড়িচালক ভাইদের অনুরোধ জানাবো, গাড়িতে আত্মরক্ষার্থে প্রয়োজনে লাঠি ও লোহার রড রাখবেন। কোন দুষ্কৃতিকারী আক্রমণ করলে সেই দুষ্কৃতিকারীকে শায়েস্তা করবেন। আক্রান্ত হলে আক্রমণকারীকে প্রতিহত করতে আইনেও বাধা নেই। এই দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থেকে পাড়া-মহল্লায় দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচন পর্যন্ত এ গণশত্রু ও দুষ্কৃতিকারীরা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাবে। বিএনপি-জামাত এখন রাজনৈতিক দল নয়, এরা রাজনৈতিক কর্মীও নয়, তারা জনশত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। সেই কারণে তারা নির্বাচনকে ভণ্ডুল করতে চায়।
“আমরা চাই, তারা এই পথ পরিহার করে নির্বাচনে এসে তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুক। কিন্তু তারা জনগণকে ভয় পায়, তাই ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের মত জনগণের ওপর এখন পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ শুরু করেছে, মসজিদেও আগুন দিয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাড়ি ও বিচারপতিদের কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়েছে।”
প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সমস্ত রক্ত চক্ষুর মধ্যেও কখনও আপোষ করেননি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী তার জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে আমার সুযোগ হয়েছে সারা বাংলাদেশ ভ্রমণ করার। যেখানেই গিয়েছি, আমার বাবার কথা বললেই মানুষের একটা আলাদা সম্মান আমি দেখেছি। আমি মনে করি আমার এবং আমার পরিবারের সবচে বড় পাওনা।”
চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এ স্মরণ সভার আয়োজন করে।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দলের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদিকা ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা ইউনিটের সভাপতি মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা ইউনিটের সভাপতি এমএ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান বক্তব্য দেন।