“সে মিথ্যাবাদী, যদি বিচার হয় আইনে, সেটা কি অন্যায়?” বলেন তিনি।
Published : 28 Jan 2024, 09:44 AM
দুই বছরের সাজা নিয়ে জেলে যাওয়া মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্র ‘টাকা খেয়ে’ বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেছেন, “হেফাজত নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, কিছু লবিস্ট, বিএনপি- জামায়াত ধর্মান্ধদের টাকা খেয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দেয়। সেই আদিলুর রহমান টাকা খেয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে বিদেশিদের বিভ্রান্ত করে।"
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দশ বছর আগে মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর দায়ে বৃহস্পতিবার আদিলুর ও অধিকার পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয় আদালত।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “২০১৩ সালে ৫ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে হেফাজত সমাবেশ করেছিল। আমি সেদিন খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে ছিলাম। খুব কাছে থেকে দেখেছি, তাদেরকে খুব অনুরোধ করেছিলাম সমাবেশ শেষ করতে, সন্ধ্যার দিকে সরকারের কাছে খবর এল- তারা সমাবেশ থেকে উঠে যাবে না। রাতের মধ্যে তারা গণভবন ঘেরাও করে, সচিবালক ঘেরাও করে তারা সরকারের পতন ঘটাবে।
“রাত ৮টার দিকে কি দেখেছিলাম? খালেদা জিয়া বিবৃতি দিয়ে জানাল, বিএনপির নেতারা হেফাজতের পাশে দাঁড়াতে। এরশাদ ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি নিয়ে হেফাজতের পাশে দাঁড়ালেন। খাবার নিয়ে দাঁড়ালেন। সারা দেশ আতঙ্কগ্রস্ত; গণভবন ঘেরাও হবে কি না? সচিবালয় ঘেরাও হবে কি না? হেফাজতের কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, নাকি বিএনপির কাছে দিবে ক্ষমতা। এমন এক পরিস্থিতি। আপনারা নিশ্চয় ভুলে যান নাই, রাত ৩টার মধ্যে শাপলা চত্বর পরিষ্কার হয়েছিল। সেখানে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছিল ঢাকা মহানগরের নেতারা।"
দিনভর সরকারের বারবার আহ্বানেও হেফাজত ওই স্থান না ছাড়ায় রাতে সমন্বিতভাবে অভিযান চালিয়ে তাদের সরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই অভিযানে ৬১ জন নিহত হন বলে পরে অধিকার তাদের এক প্রতিবেদনে দাবি করে; যদিও পুলিশের দাবি, রাতের অভিযানে কেউ মারা যাননি, আর দিনভর সংঘাতে নিহতের সংখ্যাটি ১১।
সেই প্রসঙ্গ টেনে কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, “হেফাজতের সেই সমাবেশে ৬১ জন মানুষ মারা গেছে, এর চাইতে বড় মিথ্যাচার আর কি হতে পারে? সে মিথ্যাবাদী যদি বিচার হয় আইনে, সেটা কি অন্যায়?
“বিএনপি একটানা আন্দোলন-সংগ্রাম করছে, একই দাবি নিয়ে ১৩ সাল থেকে শুরু করেছে; শেখ হাসিনা পালাবার পথ পাবে না- একই কথা বারবার বলছে, শেখ হাসিনার পতন না হলে তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না।"
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা নিয়ে রাজ্জাক বলেন, "ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিএনপির ভাষায় আরেকটি রেজুলেশন তারা নিয়েছে। আপনারা বাংলাদেশে টিম পাঠান। আপনারা বলেছেন- বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নাই, কথা বলার অধিকার নাই, মানবাধিকার হুমকির মুখে।
“মানবাধিকার কি শুধু মিথ্যাচার করা? আপনারা সংখ্যালঘুদের সাথে কথা বলেন। বাংলাদেশের দুই-এক ভাগ সংখ্যালঘু যদি বলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদেরকে নিরাপত্তা দেয় নাই, সবচেয়ে ভালো অবস্থানে নাই, আমরা এ দেশে সরকারে থাকব না।”
সরকারের উদ্যোগের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে এমপি হিসেবে বলছি- এদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান, গারো, চাকমা, প্রতিটি মানুষের, এই সংখ্যালঘুদের ৯৯ ভাগ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে তাদের অধিকার সবচেয়ে বেশি থাকে। নাগরিক হিসেবে সবচেয়ে বেশি অধিকার ভোগ করে।"
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)