আইএমএফের প্রশ্নের জবাব দিতে পারছে না সরকার: বিএনপির মোশাররফ

“অর্থনীতিকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে ক্ষমতাসীনরা,” বলেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2022, 03:53 PM
Updated : 8 Nov 2022, 03:53 PM

মেগা প্রকল্পে ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ রিজার্ভের অর্থ খরচ করে সরকার এখন তার ‘হিসাব দিতে পারছে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচরা সভায় তিনি বলেন, “আজকের পত্রিকায় আছে, আইএমএফ জিজ্ঞাসা করেছে- কেন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, কেন অর্থ পাচার হচ্ছে, কেন মূল্যস্ফীতি বাড়ছে? উত্তর দিতে পারছে না।”

বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, “কেন আমাদের আজকে রিজার্ভ নেই? কেন রিজার্ভের হিসাব এই সরকার আইএমএফকে দিতে পারছে না? কেননা সারা পৃথিবীতে নিয়ম নেই যে- রিজার্ভ থেকে নিজের দেশের অভ্যন্তরে মেগা প্রজেক্টে ঋণ দেওয়া। তারা (সরকার) ঋণ দিয়েছে।

“কিন্তু এটাতে আন্তর্জাতিক যে নিয়ম, সেই নিয়মে সেটা তারা হিসাবে আনতে পারছে না। তার জন্য দেখাচ্ছে রিজার্ভ বেশি, আইএমএফ দেখছে কম। এটা আজকে জনগণের কাছে প্রকাশিত হয়ে গেছে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, “আজকে বাংলাদেশ কিন্তু সেই ৭২-৭৫ এ যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করে বাংলাদেশকে একটি ধ্বংসের পথে নিয়ে গিয়েছিল, তারাই কিন্তু ১৪ বছর যাবত গায়ের জোরে ভোট ছাড়া ক্ষমতায় বসে আছে। অর্থনীতিকে তারা ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে।”

সারাদেশের মানুষ পরিবর্তন চাইছে দাবি করে তিনি বলেন, “কেনো চায়? এই সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে, লুটপাট করেছে, টাকা পাচার করে বাংলাদেশকে দেউলিয়া করে ফেলেছে, ব্যাংক লুট করে ব্যাংককে দেউলিয়া করে ফেলেছে। দেশকে তারা এই অবস্থায় নিয়ে গেছে।

“আজকে দেশের মানুষ এই অবস্থা থেকে মুক্তি চায়, এই সরকার থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। আমরা জানি, কোনো স্বৈরাচারী সরকার স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়ে না। সেখানে প্রয়োজন হয় আন্দোলন সংগ্রামের।”

অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামের উদাহরণ টেনে বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, “আমাদের দেশেও প্রমাণ আছে- পাকিস্তানের সময়ে আইয়ুব খানের আমলে ঠিক একই রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সামনে কিন্তু তাকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল।

“এই বাংলাদেশে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা করে এই অবস্থা সৃষ্টি করেছিল, সেখানে গণঅভ্যুত্থানের সামনে এরশাদকে মাথা নত করতে হয়েছিল। আজকে জনগণের মধ্যে বিক্ষোভের দানা বেঁধেছে। বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশগুলোই তার প্রমাণ।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা হয়।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে এবং ডা. মেহেদী হাসান ও সায়ীদ মেহবুব উল কাদিরের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, ড্যাবের মহাসচিব ডা. আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাক রহিম স্বপন, মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, জহিরুল ইসলাম শাকিল, শহিদুল আলম, সিরাজুল ইসলাম, আদনান হাসান মাসুদ, পারভেজ রেজা কানন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. বজলুল গনি ভুঁইয়া, নিলোফা ইয়াসমীন, শহিদুর রহমান, শামীম সরকারসহ ড্যাবের সদস্যরা।