Published : 25 Feb 2025, 08:04 PM
দলের প্রবীণ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি।
রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রয়াত নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত হয়।
মঙ্গলবার বিকালে আসর নামাজের পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান নোমানের কফিন আনা হয়। প্রথমে কালো কাপড়ে আচ্ছাদিত স্থানে কফিনটি রাখার পর দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা তা বিএনপির পতাকা দিয়ে ঢেকে দেন।
পরে মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ নেতারা দলের পক্ষ থেকে কফিনে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে ঢাকা মহানগর বিএনপি, শ্রমিক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এর আগে নয়া পল্টনের সড়কে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বিএনপি মহাসচিবসহ শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, জহির উদ্দিন স্বপন, এম এ হালিম, শাহজাদা মিয়া, আরিফুল হক চৌধুরী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, মাহবুবে রহমান শামীম, মীর হেলাল, ইশরাক হোসেন, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাগপার আসাদুর রহমান আসাদসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
৮০ বছর বয়সী নোমান দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।
পরিবারের সদস্যরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার মেয়ে দেশে ফিরলে শুক্রবার চট্টগ্রামে রাউজানের নিজের গ্রামের বাড়ি গহিরায় পারিবারিক কবর স্থানে তাকে দাফন করা হবে।
নয়া পল্টনে জানাজার আগে বেলা আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সাবেক সাংসদ আবদুল্লাহ আল নোমানের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৯১ সালে চট্টগ্রাম-৯ আসন এবং ২০০১ সালে চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন নোমান।
খালেদা জিয়ার দুই সরকারের আমলে মৎস্য ও পশু সম্পদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান, বন ও পরিবেশ এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
নয়া পল্টনে জানাজার আগে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রিয় নেতা, আমাদের নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান আমাদের মাঝ থেকে আজকে সকাল ৬টায় চলে গেছেন। তিনি মৃত্যুর আগে চট্টগ্রামে আজকে যে সমাবেশ (বিএনপির সমাবেশ) হওয়ার কথা ছিল সেই সমাবেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অর্থাৎ জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি দল ও পার্টির কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
”আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা যিনি একাত্তর সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন, ছাত্র জীবনে ছাত্রদের জন্য কাজ করেছিলেন পরবর্তীকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তিনি দেশের পূনর্গঠনের কাজে নিয়োজিত হয়েছিলেন এবং বিএনপিকে একটি শক্তিশালী সংগঠনের পরিণত করছেন। সেই নেতা আমাদের মাঝ থেকে চলে যাওয়াতে আমাদের যে অপুরণীয় ক্ষতি হল সেটা খুব সহজে পূরণ হবার নয়। তার চলে যাওয়া নি:সন্দেহে আমাদের জন্য অত্যন্ত শোকাবহ।”
তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তিনি বলেন, ‘‘আমি বিএনপির পক্ষ থেকে, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছি। আল্লাহ তাকে যেন বেহস্ত নসিব করেন।”
অনুষ্ঠানে প্রয়াত নেতার দলের নেতাকর্মীদের কাছে দোয়া চান।
জানাজার আগে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।