১৪ দলের ‘ঐক্য প্রশ্নের’ মীমাংসা চান মেনন

ধর্মীয় মূল্যবোধের নামে শিক্ষা নীতিকে ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না, বলেন জোটের শরিক দল ওয়ার্কাস পার্টির এই সভাপতি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2023, 03:55 PM
Updated : 28 Jan 2023, 03:55 PM

দুর্নীতি-বৈষম্য, তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ দ্রব্যমূল্য বাড়ায় মানুষের জীবনে অস্থিরতা ও আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে রাশেদ খান মেনন বলেছেন, নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ যে ভোট চাইছে তাতে ১৪ দলের ঐক্যকে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।

শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৪ দলের শরিক দল ওয়ার্কাস পার্টির ঢাকা বিভাগীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সমাবেশে ধর্মীয় মূল্যবোধের নামে শিক্ষা নীতিকে ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেন আওয়ামী জোট সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “মানুষের এখন মূল প্রশ্ন আমরা বাঁচব কীভাবে? মূল্যস্ফীতি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি সংকট; এমনকি আমরা যে রুটি দিয়ে নাস্তা করি, সেই গমেরও সঙ্কট।

“মানুষ প্রতি মুহূর্তে পথ খুঁজছে। কীভাবে বাঁচব, কীভাবে এগোব। মানুষের জীবনে এখন অস্থিরতা ও আস্থাহীনতা বিরাজ করছে।”

অর্থপাচার, ব্যাংক লুটকারীদের বিচার ও শিক্ষাব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “ধর্মীয় মূল্যবোধের নামে শিক্ষা নীতিকে ধ্বংস করতে দেব না। আমাদের দুর্ভাগ্য, জনগণের উপর আস্থাহীনতা বা নির্ভর না করতে পারার কারণে সরকার পিছু হটছে।

“নতুন বই এসেছে। সেই বই নিয়ে চারিদিকে ‘রা-রা’ শুরু হয়ে গেছে। কারণ সেখানে বিজ্ঞানের কথা, প্রগতি-অগ্রগতির কথা আছে। আর তারা দাঁড়িয়ে বলছে, এসব কিছু রাখা যাবে না। আর শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে স্বীকার করেছেন, ভুল-ভ্রান্তি হয়েছে।”

এটিকে ‘আত্মসমর্পন’ বর্ণনা করে শিক্ষামন্ত্রীর এই ‘পিছু হটাকে’ সমর্থন করেন না বলে জানান মেনন।

জোটের অন্যতম শরিক আওয়ামী লীগের উদ্দেশে মেনন বলেন, সামনে নির্বাচনের জন্য আপনারা ভোট চাইছেন। ভোট চান, আপত্তি নাই।

তবে ১৪ দলের জন্য ভোট চাইতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আজকে মিত্রদের ঐক্যের প্রয়োজন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি, সেই বাঁধন শিথিল থেকে শিথিলতর হয়। মুখে কথা থাকে এক, কাজে সেটা মিলে না।

“কেবলমাত্র নিজেদের জন্য নয়, সেই ভোট চাইতে হবে ১৪ দলের জন্য, সকল অসাম্প্রদায়িক শক্তির জন্য। এই ঐক্যের প্রশ্নটি মীমাংসা হওয়া জরুরি বলে আমি মনে করছি।”

এসময় বাংলাদেশে বিদেশিদের হস্তক্ষপের সমালোচনা করেন মেনন।

তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও পশ্চিমারা ভয়ানক পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারাই অস্ত্র সরবরাহ করছে। তাদের এশিয়া-প্যাসিফিক স্ট্যাট্রেজিতে বাংলাদেশকে যুক্ত করার চেষ্টা করছে।

“সে কারণেই তারা আমাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সংস্থাগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। আমরা বলতে চাই, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ যার বন্ধু তাদের শত্রু লাগে না। সরকারকে তাদের হস্তক্ষেপে আত্মসমর্পন না করার আহ্বান জানাই আমরা।”

দলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাষ্ট্রদূতদের ‘নাক না গলানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন।

পলিট ব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসানের সঞ্চালনায় সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, পলিট ব্যুরোর সদস্য নুর আহমেদ বকুল, মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সাদাকাত হোসেন বাবুল, দক্ষিণের আহ্বায়ক কিশোর রায়, টাঙ্গাইল জেলা সভাপতি পাওয়ার চৌধুরী, গাজীপুর জেলা সভাপতি আব্দুল মজিদ, নারায়ণ জেলা সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু সাহা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করম আলী বক্তব্য দেন।