তাদের পক্ষে আর সম্ভব হবে না: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব জানান, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোড শেডিং এবং নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ১১ অগাস্ট নয়া পল্টনে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2022, 02:40 PM
Updated : 8 August 2022, 02:40 PM

দুর্বার গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যুবকরা দেশে ‘গণতান্ত্রিক সরকার’ প্রতিষ্ঠা করবে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে।

সোমবার বিকালে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুব দলের সমাবেশে তিনি বলেন, “এই সরকার টিকে আছে মানুষকে প্রতারণা করে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকের এই যুব সমাবেশে জনসমাগমের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, তাদের দিন ফুরিয়ে এসেছে, তাদের পক্ষে আর সম্ভব হবে না।”

“বাংলাদেশে যুব সমাজ জেগে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি যুবকদের এই আত্মত্যাগের (ভোলার আবদুর রহিম ও নুরে আলম) মধ্য দিয়ে, তাদের দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেশকে তারা আবার মুক্ত করবে।”

গত ৩১ জুলাই ভোলার সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুর রহিম ও ছাত্র দলের নুরে আলমের মৃত্যু এবং জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী যুব দলের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়।

সমাবেশে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আজকের জ্বালানি সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, আজকের বিদ্যুতের লোডশেডিং, বিদ্যুতের সংকট সব কিছুর মূলে হচ্ছে এই সরকারের দুর্নীতি, চরম দুর্নীতি।

“আপনারা দেখেছেন যে, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে তারা কিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে এবং তাদের নিজস্ব লোকজনদের তারা মুনাফা পাইয়ে দিয়েছে।”

এসময় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাব অনুয়ায়ী গত সাত বছরে ২৭০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকে তার হিসাব আছে ২৩৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার।

“বাকি ৩০ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার কোথায় গেল? আজকে জাতি এটা জানতে চায়।

“এটা একটা বিরাট শুভঙ্করেরে ফাঁকি, বিরাট একটা লুটের চিত্র। এই লুট ও চুরি যে শুরু হয়েছে এই লুট ও চুরি করে তারা এদেশকে ফোকলা করে দিয়েছে।”

মির্জা ফখরুল জানান, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোড শেডিং এবং নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ১১ অগাস্ট ঢাকায় নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টায় প্রতিবাদ সমাবেশ করবে বিএনপি।

এছাড়া আগামী ১২ অগাস্ট সারাদেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়েও প্রতিবাদে সমাবেশ হবে বলে জানান তিনি।

“এরপর আমরা আরও বৃহত্তর কর্মসূচির দিকে এগিয়ে যাব এবং এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পতন ত্বরান্বিত করব।”

সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। যদি বিএনপি শক্তভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায় এই সরকার এক মিনিট ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।

“আমাদের সকলে রাজপথে থাকতে হবে। আমাদের সীমানা আটকে গেছে, প্রেসক্লাব-বিএনপি অফিসে। এর বাইরে যদি আমরা না যেতে পারি তাহলে কখনোই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না।

“আমাদেরকে এর বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে, আমাদেরকে মিছিলে নামতে হবে, আমাদেরকে হরতালে যেতে হবে, আমাদেরকে অবরোধে যেতে হবে- তাহলে সরকারের পতন ঘটবে, নইলে এই সরকারের পতন ঘটবে না।”

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “কর্মসূচিতে আমরা যদি হার্ড লাইনে না যাই এবং সরকারকেও আমরা আমাদের শক্তি প্রদর্শন না করি তাহলে সরকার সরকারের জায়গা থাকবে আর আমরা জনসভা করব, অগণিত মামলায় জর্জরিত হব। কিন্তু আমরা সরকার পতন ঘটাতে পারব না।”

তিনি বলেন, “আমি এখনো মনে করি, রাজপথে আন্দোলনে থাকার মতো শক্তি সাহস আমার আছে, আমার যখন আছে প্রত্যেকেরই আছে। আমরা কেউ কাপুরুষ নই।

“সেজন্য বলছি, আমাদের এই যে গণতান্ত্রিক যে কর্মসূচি এই কর্মসূচির বাইরে গণতন্ত্র ও সংবিধান সম্মতভাবে অনেক কর্মসূচি আছে যে কর্মসূচি আমরা রাজপথে দিলে সরকারের বুক কেঁপে উঠবে।সেখানেই আমাদের যেতে হবে।”

যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নার পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্র দলের কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, যুব দলের মামুন হাসান, নুরুল ইসলাম নয়ন, কামরুজ্জামান দুলাল, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মওলা শাহিন, ইসাহাক সরকার বক্তব্য রাখেন।