ঢাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির চট্টগ্রাম নগর কমিটির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেছেন, “দলীয় সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার। ১০ ডিসেম্বর ঢাকার অলিতে গলিতে এ সমাবেশ হবে। কেউ বন্ধ করতে পারবে না। এই সমাবেশ আপনারা বন্ধ করতে পারবেন না।”
ঢাকার নয়া পল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত ও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রামের নগর বিএনপি কার্যালয়ের মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শাহাদাত বলেন, “টাকা পাচারে বিরুদ্ধে, ব্যাংক লুট ও খুনির বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে। চট্টগ্রামের মানুষও জেগে উঠেছে। ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। অচিরেই এই স্বৈরচার সরকারের পতন হবে।
“আজকেও দলীয় কার্যালয়ে (নয়া পল্টন) এই আওয়ামী বাহিনী কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। এই ফ্যাসিবাদীর বিরুদ্ধে আমাদের জেগে উঠতে হবে। যে যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি ঢাকার বুকে যেকোনো জায়গায় হবে।”
চট্টগ্রামে গত ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জনসভার প্রসঙ্গ টেনে নগর বিএনপির সভাপতি বলেন, “সেখানে তাদের সভানেত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছেন, মানুষ খুন ও ভোট চুরি নাকি বিএনপির গুণ। উনি আসলে উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়েছেন।
“ভোট চুরি, মানুষ খুন, সন্ত্রাস, মামলা-হামলা, ব্যাংক লুট আওয়ামী লীগের বড় গুণ। গতকাল ঢাকার পল্টনে বিএনপির ওপর হামলা ও কর্মীদের খুন করার পর তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে।”
শাহাদাত বলেন, “পার্টি অফিসের সামনে নেতাকর্মীরা থাকবে, সেটি তো স্বাভাবিক। কিন্তু পার্টি অফিসের সামনে যেভাবে সন্ত্রাসীরা হামলা করলো তা নজিরবিহীন।”
কেন্দ্রীয় বিএনপি'র শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বক্তব্য রাখেন।
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে উত্তাপ ছড়ানোর মধ্যে বুধবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হওয়া দলটির নেতা-কর্মীদের উপর চড়াও হয় পুলিশ।
সংঘর্ষে এক বিএনপি সমর্থক নিহত এবং অনেকে আহত হন। এরপর পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ে ঢুকে দলটির কয়েকশ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম নগরীতে নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে করে দলটি।
এ কর্মসূচি নিয়ে সকাল থেকেই নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে ছিল পুলিশের সতর্ক অবস্থান। দুপুরের পর থেকে বিএনপি কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের মাঠে প্রবেশ করতে থাকে। বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মীরা স্বাভাবিক ভাবে এসে এসে দলীয় কার্যালয়ের কাছে গিয়ে মিছিল নিয়ে প্রবেশ করে। এতে পুলিশকে বাধা দিতে দেখা যায়নি। সমাবেশ শেষে দলীয় নেতা-কর্মীরা নিজেদের মতো করে চলে যান।
ছাত্রদলের দুই নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩
এদিকে ছাত্রদলের দুই নেতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিন জন হলেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইরফানুল হাসান রকি, নগর কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আরিফুর রহমান ও যুবদল কর্মী নজরুল ইসলাম।
কোতোয়ালী থানার ওসি জাহেদুল কবিরের ভাষ্য, “ঢাকার ঘটনার পর বুধবার রাতে নগরীর আলমাস সিনেমা মোড়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিছিল করে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
“সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।”
ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ এক গাড়ির মালিকের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান ওসি জাহেদুল।