বিদ্যুতে ‘লুটপাট সমন্বয়’ জনগণের পকেট মেরে: গয়েশ্বর

“দেশটাকে আজকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় নিয়েছে। এভাবে বিদ্যুৎ খাত থেকে যে লুটপাটটা হয়েছে সেই টাকা সমন্বয় করছেন জনগণের পকেট মেরে,“ বলেন এই বিএনপি নেতা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2023, 10:44 AM
Updated : 3 March 2023, 10:44 AM

দাম বাড়িয়ে বিদ্যুৎ খাতে সমন্বয়ের নামে সরকার দেশে ‘লুটপাট’ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার এক মানবন্ধনে তিনি বলেন, “সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। তারা বলছে, ভুতর্কি দেওয়া যাবে না, তারা সমন্বয় সাধন করিতেছে। ইতোমধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পার করে নিয়েছে…।

“দেশটাকে আজকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় নিয়েছে। এভাবে বিদ্যুৎ খাত থেকে যে লুটপাটটা হয়েছে সেই টাকা সমন্বয় করছেন জনগণের পকেট মেরে। দেশটা কি মগের মুল্লক, দেশটি কি প্রধানমন্ত্রী অথবা মন্ত্রিপরিষদের সদস্য আছেন, তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি?”

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন গয়েশ্বর।

দেশের বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে ভারতের আদানি গ্রুপের চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, ভারতবর্ষে একজন দরবেশ আছে, তার নাম আদানি। তার প্রতিষ্ঠানের সাথে সরকার চুক্তি করেছে।

“প্রকাশিত সংবাদে আমরা বুঝি- যেখানে দুইশ ডলার কয়লার দাম, সেখানে চারশ ডলার নির্ধারণ করে ভারতের আদানি গ্রুপের সাথে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। সেখানে একটা ক্লজ আছে- ক্যাপাসিটি ট্যাক্স, অর্থাৎ আগামী ২৫ বছরে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার কোটি টাকা আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্যাপাসিটি ট্যাক্স দিতে হবে।”

বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিক রাখতে ভারতের আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর চুক্তি করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। চুক্তি অনুযায়ী ঝাড়খণ্ডে আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে চলতি মার্চ মাসের শুরুর দিকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা বলে আসছে সরকার।

গয়েশ্বর বলেন, “পহেলা ফাল্গুন তো কয়েকদিন আগে গেল- তাই না। ফাল্গুনে সকল পত্রিকা বা সাহিত্যিকরা কী লেখেন- ‘ফুল ফুটুক বা না ফুটুক, কোকিল ডাকুক বা না ডাকুক আজ বসন্ত’। সুতরাং আদানি বলেন বা দেশে যারা কুইক রেন্টালে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী, তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করুক বা না করুক, তাদেরকে ক্যাপাসিটি ট্যাক্স দিতে হবে।”

দেশে যারা ‘লুটপাটে জড়িত’ তারাই ‘সবচেয়ে নিরাপদে’ মন্তব্য করে এ বিএনপি নেতা বলেন, “আজকে কারা নিরাপদ বাংলাদেশে? একমাত্র নিরাপদ তারা যারা লুটপাটে জড়িত, প্রশাসনে যারা দুর্নীতি করে ঘুষ খায়। এই একটি চক্র।”

তার কথায়, “এই সরকার দেশপ্রেমিক নয়, এই সরকার গণতান্ত্রিক নয়। যেহেতু সরকার গণতান্ত্রিক নয়, তারা জনগণের কথা তোয়াক্কা করে না।

এর বিরুদ্ধে সবাইকে রুখ দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে এই বিএপি নেতা বলেন, “এই যুদ্ধে যারা শামীল হবেন- ভালো। যারা হতে পারবেন না বা বিরোধিতা করবেন তারা একাত্তরের মত গণদুশমনে বা রাজাকারের খাতায় নাম লেখাবেন।”

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডেএম জাহিদ হোসেন, সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।