“সত্যকে পাশ কাটিয়ে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা, নিজের অতীত অপকর্ম ভুলে গিয়ে দায় অপরের উপরে চাপিয়ে দেওয়া তাদের অভ্যাস” বলেন তিনি।
Published : 12 May 2024, 08:12 PM
কোন অদৃশ্য শক্তি বাংলাদেশ চালায়, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি নেতা প্রসঙ্গটি তোলার পরদিন রোববার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই প্রশ্ন রাখেন।
কাদের বলেন, “বিএনপির নেতারা নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে অবিরাম মিথ্যাচার, অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। কোন অদৃশ্য শক্তি বাংলাদেশ চালাচ্ছে পরিষ্কার করে ফখরুল সাহেব বলবেন কি?”
বিএনপির ‘অসত্যকে সত্য বলে’ চালানোর সুনিপুণ কৌশল খাটায় বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, “সত্যকে পাশ কাটিয়ে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা, নিজের অতীত অপকর্ম ভুলে গিয়ে দায় অপরের উপরে চাপিয়ে দেওয়া তাদের অভ্যাস।”
আগের দিন নয়া পল্টনে যুবদলের সমাবেশে অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নয়, দেশে চালাচ্ছে ‘অদৃশ্য শক্তি।’
তবে সেই শক্তি কারা, সে বিষয়ে তিনি কোনো বক্তব্য রাখেননি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “দেশটা নাকি আমরা চালাচ্ছি না। একটা নির্বাচিত সরকার ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেছে, নিরপেক্ষ নির্বাচন বলতে যা বোঝায়, সেই রকম একটা নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন করতে সক্ষম হয়েছে।”
২০০৯ সালের আগে নির্বাচন ব্যবস্থা কী ছিল- সেই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ছিল। সেখান থেকে সংসদে আইন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন করা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে শেখ হাসিনা স্বাধীন করেছেন।
“বিএনপি এমন একটা নির্বাচন কমিশন চায়, যারা বিএনপিকে জেতার গ্যারান্টি দেবে। বিজয় লাভের নিশ্চয়তা ছাড়া এই দল নির্বাচন অংশ নিতে চায় না।”
বিএনপি মহাসচিবের অন্য বক্তব্যের জবাব দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “মির্জা ফখরুল সাহেব জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছেন। তাদের সময় দেশের মানুষকে অর্ধাহারে, অনাহারে থাকতে হত।
“১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে শুধু খাদ্য নিরাপত্তায় নিশ্চিত করেনি বরং খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ সরকার চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি করেছে দাবি করে তিনি বলেন, “কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এই কমিউনিটি সেবা জাতিসংঘ কর্তৃক শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।”
আরেক প্রশ্নে কাদের বলেন, “শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগেই বলেছেন, ‘নির্বাচনের পর দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে।’ নেতাকর্মীদের তিনি এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেন।
“শেখ হাসিনা কিন্তু বলেননি নির্বাচন হলেই সংকট কেটে যাবে। তিনি বলেছেন, দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হতে পারে। সে চেষ্টা অনেকেই করছেন আন্তর্জাতিক ভাবে ও দেশের অভ্যন্তরে।”
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আসছেন বলে আবারও জানান আওয়ামী লীগ নেতা।
তিনি বলেন, “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে পাঠানো মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চিঠির ফলোআপ করতে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে আসছেন।”
বিএনপি কথা বলে উত্তাপ ছড়াচ্ছে কি না এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, “আমরা কোনো উত্তাপ ছড়াতে চাইনি। আমরা বিএনপির হাসিখুশি ভাব দেখলাম, হঠাৎ চাঙ্গা হয়ে গেছে।
“এখন বিএনপির মনে আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না- এ ধরনের উদ্ভট চিন্তাও থাকতে পারে। তারা তো এমন অনেক উদ্ভট চিন্তা করে প্রলাপ বকেছিল বার বার। জনগণ দ্বারা প্রত্যাখাত হয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: