“যারা গুমের ঘটনায় দায়ী, যারা হত্যা করেছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের সম্মুখীন করুন,” বলেন তিনি।
Published : 30 Sep 2024, 09:36 PM
দেশে গুম-খুনের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেছেন, “আমি নিজেই গুম ছিলাম…কবর থেকে বেরিয়ে আসা একজন মানুষ। আমাদের দেশ থেকে চিরতরে গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করার জন্য কাজ করতে হবে। আপনারা যারা এখনও স্বজনদের ফিরে পান নাই…আপনারা তো জিন্দা লাশ।
“যারা গুমের সংস্কৃতির ধারক-বাহক, যারা গুম করেছে, হত্যা করেছে, তারা কারা আপনারা জানেন। বাংলাদেশের জনগণ জানেন…এই জিয়াউল হাসান, বেনজীর, মনিরুল, ডিবি হারুন, বিপ্লব, মেহেদী…যত আছে নো মার্সি, গো টু জাস্টিস। তাদেরকে ইন্টারোগেট করতে হবে। তারা মানুষকে গুম করেছে, হত্যা করেছে, তাদের বিচার করতে হবে।”
ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরের মূল সম্মেলন কক্ষে ‘গুম: জান ও জবাব’ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর অনুষ্ঠানে একথা বলেন সালাহউদ্দিন।
গুমের শিকার স্বজনদের পাশে থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “গুমের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশে যদি ভবিষ্যতে একটি গুমের ঘটনা হয়, একটি বিচারবহির্ভূত ঘটনা হয়, অবৈধ আটকাদেশের ঘটনা হয়; আমরা তাদের পাশে থাকব। এই প্রতিশ্রুতি আমরা দিচ্ছি।
“আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা গুমের ঘটনার সঙ্গে দায়ী, যারা গুম করেছে, হত্যা করেছে, তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করুন। তাদেরকে বিচারের সম্মুখীন করুন।”
জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে গুমের শিকার স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। তাদের সবার হাতে ছিল গুম হওয়া প্রিয়জনদের আলোকচিত্র।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বসে আছে সমস্ত জায়গায়। আমি গতকালকে (রোববার) সরকারকে একটা অনুষ্ঠানে বলেছি, যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে যারা ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে চাকুরি দেওয়ার সুপারিশ করেনি, তারা যদি পদত্যাগ না করে, আমরা পদত্যাগ করাব।
“এরকম দেখবেন সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে। এরা থাকলে আমরা কীভাবে বিচার পাব।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, আলোকচিত্রী মোশফিকুর রহমান জোহানও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে ফুটে উঠেছে গুমের শিকার ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারি, অপেক্ষা আর যাতনার মুহূর্তগুলো। একটি ছবিতে সিসিটিভি ভিডিওর একটি দৃশ্যে সাদা প্রাইভেটকারে মানুষকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিত্র ফুটে উঠেছে। আরেকটি ছবিতে ছেলের ছবি হাতে ভারাক্রান্ত মনে অসুস্থ মায়ের অপেক্ষার দৃশ্য ফুটে উঠেছে। কোনো ছবিতে দেখা যায়, মা-ছেলে অপলক তাকিয়ে আছে জানালার দিকে।
সকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন, যা চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ এর জ্যেষ্ঠ গবেষক তাসকিন পারভীন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বক্তব্য দেন।