”দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি,” বলেন ওসি।
Published : 06 Mar 2025, 01:55 AM
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হামলায় আহত হওয়ার অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের অনুসারীরা।
বুধবার মধ্যরাতে ভাটারা থানায় গিয়ে তাদের ওপর হামলার অভিযোগ করেন তারা।
এ ঘটনায় সারজিস হামলাকারীদের ছাত্রদলের নেতাকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। হামলায় অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই অছাত্র বলে তার ভাষ্য।
একই ঘটনায় পাল্টা অভিযোগ নিয়ে থানায় অবস্থান করছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীও।
ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, “পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নিয়ে দুই পক্ষ থানায় এসেছে। সারজিস আলমও আছেন। দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি।”
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সড়কের মধ্যে রাত ১০টার দিকে এ দুই অংশের মধ্যে হাতাহাতি বিষয়ক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনার একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, সারজিস আলম তার অনুসারীদের নিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি সড়কে কথা বলার সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে ধাক্কা-পাল্টা ধাক্কা ও হাতাহাতি শুরু হয়।
রাত ১০টার দিকে তারা যেখানে বিতণ্ডায় জড়ান তা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কাছেই।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুজন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর হামলা নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ধাক্কা-ধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়।
এ ঘটনা নিয়ে রাত ২টার দিকে সারজিস আলম তার ফেইসবুক প্রোফাইলে এ হামলার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে পোস্ট দেন।
সেখানে তিনি লেখেন, "ইফতারের পর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির সহযোদ্ধাদের সাথে চায়ের আড্ডা দিতে এবং তাদের কথা শুনতে যাই ৷ সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তাদের সাথে গল্প-আড্ডা হয়, তাদের কথা শোনা হয় , চায়ের আড্ডা হয় ৷
”নর্থ সাউথ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, এআইইউবি ও ইউআইইউ এই চার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক সহযোদ্ধাদের সাথে আড্ডা দিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে হেঁটে আসছিলাম ৷ আমার সাথে ১৫-২০ জন প্রাইভেটের সহযোদ্ধারা ছিল ৷ পরে নর্থ সাউথের গেটের সামনে দেখি ১০-১২ জন ঢাবি সিন্ডিকেট নিয়ে স্লোগান দিচ্ছে ৷ এরমধ্যে ছাত্রদলের সেন্ট্রাল নেতা আহমেদ শাকিল ছিল ৷ আমি এগিয়ে যাই তাদের কথা শুনতে ৷ কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমার সাথে থাকা প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদেরকে গালিগালাজ করতে থাকে ৷ ”
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি লেখেন, “ওদের ১০-১২ জনের মধ্যে ১-২ জনকে স্টুডন্ট মনে হলেও বাকিদের দেখে ভাড়া করা টোকাই দুষ্কৃতিকারী মনে হচ্ছিলো৷ বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই এদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে আমি দুই পক্ষকে চলে যেতে বলি এবং চলে আসি।
“পরবর্তীতে ছাত্রদলের শাকিল তার নেতৃত্বে তার সাথে থাকা টোকাই দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে পূর্বে আমার সাথে থাকা ওই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছেলেদের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে এবং সরাসরি মাথায় ও পিঠে আঘাত করে একাধিক জনকে রক্তাক্ত করে ৷ ”
ফেইসবুকের এ পোস্টে তিনি জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে লেখেনে, “ছাত্রদলের শাকিলসহ বাকি সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
”১৬ বছর ধরে ছাত্রদল টোকাইলীগের দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার পর আজকে যদি ছাত্রদলের কেউ একইভাবে টোকাইলীগের সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করে তাহলে তারও পরিণতি টোকাইলীগের মতো হতে খুব বেশি দিন লাগবে না ৷
”শিক্ষা নেন, সময় থাকতে নিকট অতীত থেকে শিক্ষা নেন।”
এ বিষয়ে ছাত্রদলের শাকিল বা সংগঠনটির অন্য কারও বক্তব্য জানতে পারেনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।