নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে সরকার ‘গণদুশমন’ রূপে আবির্ভূত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।
ঘোষিত তফসিল বাতিল করা না হলে আগামীতে অবরোধ-হরতাল এবং ঘেরাও কর্মসূচি আরও জোরদার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এছাড়া নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে বিরোধীদলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরিবেশ তৈরির তাগিদ দিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
তফসিলের প্রতিবাদে বিএনপি ও সমমনা বিরোধীদলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিন দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
সকাল সাড়ে ১১টায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে বিজয়নগর, পুরাতন রাজস্ব বোর্ড ভবন ও শিল্পকলা একাডেমি ঘুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
সাইফুল হক বলেন “একটা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চাই- এটা এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এই সরকার একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইতিমধ্যে গণদুশমনের খাতায় নাম লেখিয়েছে।”
গণতন্ত্র মঞ্চ কোনো ধরনের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রে নেই দাবি করে সাইফুল হক বলেন, তারা ভোটের অধিকারে রাস্তায় নেমেছেন।
সরকারের উদ্দেশে সাইফুল হক বলেন, “এখনো সময় আছে আপনারা কিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় নেবেন…নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেন… সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ অন্তবর্তীকালীন সরকার কিভাবে গঠিত হতে পারে… নীতিগতভাবে যদি সিদ্ধান্ত নেন আমরা বিশ্বাস করি তাহলে সংলাপের একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হতে পারে।”
বিরোধী দলীয় নেতাদের মুক্তি দাবি করে সাইফুল হক বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেবার ব্যবস্থা করতে হবে এবং হয়রানিমূলক সাজানো মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে আলাপ-আলোচনা-সংলাপের একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করুন।”
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, “সরকার ভাবছে, এই পুলিশ, বিজিবি, র্যাব দিয়ে দমনপীড়ন করে তারা একতরফা নির্বাচন পার করে ফেলবে। তারা আরেকটি নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসবে, তারপর বিদেশীদের পায়ে-টায়ে ধরে সব ব্যবস্থা করে ফেলবে।
“আসলে পুরো বাংলাদেশটাকে নিয়ে একটা খাদের দিকে এগোচ্ছে… তারা আমাদেরকে খাদের মধ্যে ফেলতে চায়, আমাদের দেশটাকে ধবংস করতে চায়। এই ক্ষমতাকে রাখার জন্য দেশ নিয়ে বাজি ধরে যা ইচ্ছা তাই আজকে করছে।”
আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার কর্মসূচি হুঁশিয়ারি দিয়ে সাকি বলেন, “আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে। সরকারের বরং পায়ের তলায় মাটি নাই...। আগামী দিনে অবরোধ-বিক্ষোভ-ঘেরাও নানারকম কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমরা জনগণকে আরো বড় কর্মসূচির দিকে নিয়ে যাব এবং এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামতে বাধ্য করব।”
ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফ সেলিমের সভাপতিত্বে ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খানের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেএসডির সিরাজ মিয়া, নাগরিক ঐক্যের মুফাখখারুল ইসলাম নবাব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ইমরান ইমনসহ অনান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এর আগে তফসিলের প্রতিবাদে সকালে বিজয় নগর ও নয়া পল্টনের সড়কে নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদ, ফারুক হাসানের নেতৃত্বে গণঅধিকারের আরেক অংশ, নওয়াব আলী আব্বাস খানের নেতৃত্বে ১২ দলীয় জোট, হারুন চৌধুরীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং নেয়ামূল বশিরের নেতৃত্বে এলডিপিও মিছিল করেছে।
এছাড়া বিএনপি মহানগর, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্র দল, মহিলা দল মগবাজার রেলগেইট, রামপুরা, রমনা, মতিঝিল, পুরানা পল্টনে ‘ঝটিকা’ মিছিল করেছে।