বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
Published : 20 Jun 2024, 04:23 PM
দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য ‘সরকারের ভ্রান্তনীতি’ দেখছেন বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “উজানের ঢল প্রবল গতিতে নেমে আসায় সৃষ্ট বন্যায় লক্ষ-লক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বহু মানুষ বসতবাড়ি, ক্ষেতখামার প্রচণ্ড ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-কাছারি, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ ও ক্ষেতের ফসল।”
“প্রতিবছর বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ প্রচণ্ড তাণ্ডবে সরকারের উদাসীনতা বিস্ময়কর। সরকারের ভুল নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে আজ বন্যাউপদ্রুত মানুষদেরকে।”
রিজভী বলেন, “বিশেষজ্ঞদের অভিমত সিলেটের হাওর উন্নয়নের নামে চলছে অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ড। নদীতে বাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করার কারণেই বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
“একই অঞ্চলে প্রতিবছর বন্যা হওয়ার পরেও ‘আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম’ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি সরকার। মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দেওয়া যে সরকারের কর্মসূচি, সে সরকারের দ্বারা একটি জাতির সর্বাঙ্গীন উন্নতি লাভ কখনোই সম্ভব নয়।”
রিজভী বলেন, “বৃহত্তর সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে পানিবন্দি মানুষের কাছে কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। অসহায় বিপন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে লক্ষ-লক্ষ বন্যা উপদ্রুত মানুষ।”
বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
‘দুর্বৃত্ত, সন্ত্রাসী আর সিন্ডিকেটবাজরা’ বাংলাদেশকে দখল করে নিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, “ঈদের দিন রাতে বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার প্রবাসী মেয়ের গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগায় দুইজন বাইক আরোহীকে বাসা থেকে ঢেকে নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ নেতার লোকজনরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।
“ঈদের আনন্দ উৎসবকেও বাকশালীকরণ করা হয়েছে। ঈদের দিন মানুষ হত্যার উন্মাদনার মধ্য দিয়েই আওয়ামী ক্যাডাররা উৎসব পালন করছে। কোরবানির পশুর চামড়া এবার বিক্রি হয়নি। আড়তদাররা চামড়া ফিরিয়ে দিয়েছে। এটাও সিন্ডিকেটবাজদের কারসাজি।”
‘বেকারত্বে দেশের বহু যুবক শরণার্থী’
রিজভী বলেন, “আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস। দেশের কোটি-কোটি যুবক এখন বেকার। শুধুমাত্র ভিন্ন মতের কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভূমধ্যসাগরসহ বিভিন্ন সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অনেক তরুণ-যুবকের সলিল সমাধি হচ্ছে।
“বহু বাংলাদেষি এখন নিজ দেশেই পরবাসী। একদলীয় শাসনে নিজ দেশেই ভিন্ন রাজনৈতিক মতের কারণে নিপীড়ন ও অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। এরা দেশ ছেড়ে বিভিন্ন দেশে উদ্বাস্তুর জীবন যাপন করছে। আমি সারাবিশ্বের শরণার্থীদের প্রত্যাশা ও উন্নত জীবনের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবউন নবী খান সোহেল ও সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।