‘ব্যর্থতার দায়’ অন্যের ঘাড়ে চাপাচ্ছে সরকার: মোশাররফ

বিস্ফোরণ ও সাম্প্রদায়িক হামলার দায় ঢাকতে বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2023, 11:48 AM
Updated : 8 March 2023, 11:48 AM

বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে মানুষ মারা গেলে সরকারের ‘কোনো মাথাব্যাথা নেই’ মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এসব ঘটনার দায় এড়াতে তাদের দলের ওপর ‘দোষ চাপানোর’ চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীনরা।

বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক হামলাসহ সিদ্দিক বাজারের বিস্ফোরণের জন্য সরকারকে দায়ী করে বক্তব্য দেন মোশাররফ।

তিনি বলেন, “গতকাল (মঙ্গলবার) সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, ১৭ জন মানুষ মারা গেছে, অনেকে আহত, বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে- আপনারা জানেন। ঘটনা ঘটার পরে ওরা (সরকার) বলেছে যে, এটার মধ্যে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা আছে কি না দেখি।

“আমি বলতে চাই, ঢাকা শহরে কতটি বিস্ফোরণ হয়েছে। এই সরকারের কোনো মাথাব্যথা নাই। কারণ ওরা জনগণের প্রতিনিধি নয়।”

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ ধরে মোশাররফ বলেন, “সেই সম্প্রদায়ের লোকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অমুক-অমুক গুণ্ডারা এই তচনচ করেছে, আগুন দিয়েছে, ঘর-বাড়ি ভেঙে দিয়েছে।

“সরকারের মন্ত্রী (রেলমন্ত্রী) ওই এলাকার মন্ত্রী গেছেন ঘটনা দেখতে ওই সম্প্রদায়ের লোকেরা বলছেন, আপনার সঙ্গে যারা এসেছেন তারাই তো আমাদের ওপর হামলা করেছে, ঘর-বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে।”

তবে এসব ঘটনায় ‘উল্টো’ বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন দলের স্থায়ী কমিটির নেতা মোশাররফ।

তিনি বলেন, “এই সরকারের অবহেলা ও তাদের ব্যর্থতার কারণে এসব বিস্ফোরণ, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তাদের ব্যর্থতার কারণে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়, তাদের উসকানিতে তাদের গুণ্ডা-পাণ্ডা দিয়ে এই ধরনের অপকর্ম ঘটানো হচ্ছে। অথচ ওরা একের দোষ অন্যদের ঘাড়ে দিয়ে দেওয়ার জন্য… উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে দেওয়ার জন্য চাপাবাজি করছে। বাংলাদেশের জনগণ এদের বিশ্বাস করে না।”

সরকারের এসব ‘ব্যর্থতার’ বিরুদ্ধে ‘গণঅভ্যুত্থানের’ জন্য জনগণ প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, “আমাদের মিটিং করতে দেয় না, আমাদের সমাবেশ করতে দেয় না, কেন? তাদের ভয় আমরা সমবেত হলে নাকি বিস্ফোরণ হবে, ঢাকায় বিস্ফোরণ হবে।

“আমি বলতে চাই, হ্যাঁ জনগণ সেজন্য প্রস্তুত। আজকে হোক, কাল হোক ইনশাআল্লাহ এদেশে বিস্ফোরণ হবে না, এই দেশে গণঅভ্যুত্থান হবে। অতীতে পাকিস্তান আমলে অভ্যুত্থান করে আইয়ুব খানের মত ক্ষমতাধর স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে, এই বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এরশাদের মত স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে।”

শ্রীলঙ্কার উদাহরণ টেনে মোশাররফ বলেন, “জনগণের অভ্যুত্থানে এদেশে স্বৈরাচারীকে হটে যেতে বাধ্য হয়েছে। শ্রীলঙ্কা যদি পারে ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে অতি শিগগিরই সেদিন আসবে। সেই দিনের প্রত্যাশায়…।”

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনাসভা হয়।

মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাবের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদও বক্তব্য দেন।