নববর্ষ উদযাপনকে হিন্দুয়ানি ধারা বলে কোণঠাসা করা যাবে না। সংস্কৃতির বিকাশে ধর্মীয় উপাদান যেটুকু আসে তা একেবারে ভেতর থেকে মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে আত্মীভূত হয়ে আসে। আরোপিত হয়ে এলে তা নানা বিপর্যয় ঘটায়।
Published : 14 Apr 2023, 04:17 PM
পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির নতুন বর্ষ শুরুর দিন। নতুন বর্ষের আগমনে এদিনে সকলের মনে জাগে আনন্দের বারতা। পহেলা বৈশাখ উদযাপন বাঙালির একদিনের ঐতিহ্য নয়। বাঙালির কৃষ্টির সঙ্গে সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে দিনটি। এটি কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়। ধর্মভেদ থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেক বাঙালি এ দিনটি আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপন করে। কিন্তু আমাদের বয়সী যারা তারা হয়তো মনে করতে পারবেন সাতচল্লিশে দেশ বিভাগের পরমুহূর্ত থেকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ভিন্ন কৃষ্টি, ভিন্ন সংস্কৃতি আর ভিন্ন ভাষা নিয়ে এদেশের মানুষের ওপর কীরূপ আগ্রাসন চালিয়েছে– অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক উভয় আগ্রাসন। বাঙালি জাতির ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে নিমূর্ল করার ষড়যন্ত্র চলতে থাকে সর্বত্র। কিন্তু বাঙালির মেধা-মনন-চিন্তাশক্তি এবং সর্বোপরি মনোবলের কাছে হেরে যায় ওইসব বিধ্বংসী চক্রান্ত।
বাঙালি জাতির স্বকীয়তাবোধ এত প্রবল ছিল যে, পাকিস্তানি সামরিক আমলাতন্ত্রের হাজারো বাধা-বিপত্তি, অত্যাচার-নির্যাতন উপেক্ষ করে তারা নববর্ষ উদযাপন করেছে। এদেশের শত্রুরা উৎসবটি বন্ধ করে দিতে বহু চেষ্টা করেছে। সে সব কথা আমাদের বিস্মৃত হওয়ার কথা নয়। সম্মিলিত আন্দোলনে পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটির দিন হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৬৭ সালে ঢাকায় রমনা বটমূলে বর্ষবরণ উৎসবের শুরু হয়। ওই উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিমাপের ভাষা আমার জানা নেই। এখনকার মতো হাজার হাজার লোকের সমাবেশ সেদিন হতো না, কিন্তু বাঙালির মনে যে আবেগ কাজ করত তা হলো অধিকারবোধ। কেননা সংস্কৃতির ওপর ক্রমাগত হামলায় বাঙালির প্রতিটি উৎসব হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদমুখর। এদেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য, প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য এ উৎসব প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর করে তোলা হয়। এ উৎসব বাঙালি জাতির স্বাধিকার আন্দোলনকে আরও বেগবান করে তোলে। বাঙালি একাত্ম হয় এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আপন সত্তা নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য বাঙালি জাতীয়তাবোধ, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির পক্ষে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। বাঙালির এই জয়লাভে তারা ভীত হয়ে পড়ে এবং অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং পহেলা বৈশাখের সরকারি ছুটির ওপরও এ সময় আঘাত আসে। সমগ্র বাঙালি এর সমুচিত জবাব দেয় মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং একই সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপনও কন্টকমুক্ত হয় এবং পাকাপোক্ত স্থান করে নেয়।
বাঙালি জাতীয় জীবনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন বাঙালি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সংস্কৃতি জীবনবিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। এই জীবন জন মানুষের জীবন। সংস্কৃতির এই মানুষ শ্রমনির্ভর, এই মানুষ উৎপাদক এবং সর্বোপরি মাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এদের শ্রমের ফলে যে উৎপাদন, ওই উৎপাদন থেকে গড়ে ওঠে সমাজের ভিত্তি। তাই সংস্কৃতির শেকড় জন মানুষের অন্তরে প্রোথিত। অপরদিকে কৃষ্টি শব্দের বুৎপত্তি ‘কর্ষণ’ থেকে এবং ‘কর্ষণ’ শব্দের মূল অর্থ ‘হল চালনা’ অর্থাৎ কৃষ্টি মানুষের উৎপাদিকা শ্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সংস্কৃতির আভিধানিক অর্থ ‘সংস্কার সাধন’ (সভ্যতাজনিত সংস্কার সাধন)। সংস্কৃতি ও কৃষ্টি উভয়ই মানুষের কর্মভিত্তিক। আবহমান বাংলার সংস্কৃতি আবহমান কালব্যাপী সংকর জনগোষ্ঠীর শ্রম ও উৎপাদননির্ভর কর্মকাণ্ডের ফসল। যার পরিচয় আমরা পাই আমাদের জ্ঞান বিজ্ঞানে, মানস ভাবনা, সাহিত্যে সঙ্গীতে, নৃত্যে চিত্রে, চারুকলায় তথা সমগ্র জীবনাচরণে। বাংলাদেশের মানুষের স্বাভাবিক আত্মীয়তা তার মাটির সাথে। আমরা কাল বিচ্ছিন্ন কোনো জাতি নই, প্রবাহ বিচ্ছিন্ন নই। আবহমান কাল ধরে প্রবহমান যে সংস্কৃতি ধারা বহু বিচিত্র প্রভাব ও প্রতিবন্ধকতা থাকারে পরও দেশের মাটির আপন পরিবেশে লালিত ও পরিপুষ্ট। এই প্রবহমানতার ঐতিহ্যে আমরা পেয়েছি পহেলা বৈশাখ। এই দিনটির ওপর ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালির রয়েছে অখণ্ড উত্তরাধিকার।
বৈশাখ– বাংলা সনের প্রথম মাস। বিশাখা নামের নক্ষত্র হতে এ মাসের নামকরণ করা হয়েছে বৈশাখ। পূর্বে এটি বছরের প্রথম মাস ছিল না। অগ্রহায়ণ মাসকে বৎসরের প্রথম মাস ধরা হতো। বৈশাখকে বছরের প্রথম মাস হিসেবে গণনা শুরু বেশি দিন ধরে হয়নি। বাংলা সনের ইতিবৃত্তি অনুসন্ধান করলে সম্রাট আকবরের অসামান্য কীর্তির কথা স্মরণ করতেই হবে। বাংলার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক ইতিহাসে মুঘল আমলের গুরুত্ব অপরিসীম। মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠার ফলে বাংলার আঞ্চলিক স্বাতন্ত্রের অবসান হয় এবং বাংলা তখন সর্বভারতীয় সংস্কৃতির অভিন্ন সূত্রে গ্রন্থিত হয়। এই আমলে কৃষি শিল্পের উন্নতি ও রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসার ঘটায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়। সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। একটি দেশ যখন সমৃদ্ধ এবং স্থিতিশীল হয় তখনই এ ধরনের সংস্কারমূলক কাজ করা সম্ভব। আর ওই কারণেই সম্রাট আকবরের সময় এটি সম্ভব হয়েছে এবং তিনি তার অসাধারণ দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন এতে। বাংলাদেশের আঞ্চলিকতা এবং অন্যান্য বিভাজনের মধ্যে বাংলা সন বাঙালি জাতির একাত্মতা ও ঐক্যের সূচক।
সম্রাট আকবর ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন। তিনি দীর্ঘ উনত্রিশ বছর শাসন কার্য চালানোর পর বর্ষপঞ্জি ও পঞ্জিকা সংস্কারের কাজে হাত দেন। আকবরের রাজত্বকালে বাংলাকে ‘সুবে বাংলা’ বলা হতো। সুবে বাংলা প্রতিষ্ঠার পর বাংলা সনের প্রবর্তনও একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আকবর, এলাহী সন নামে প্রথম বর্ষপঞ্জি শুরু করলেও তা টিকতে পারেনি, কিন্তু প্রায় একই সময়ে প্রবর্তিত বাংলা সন কেবল টিকেই থাকেনি বরং তা বিচ্ছিন্ন বাঙালিদের জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছে। বাংলা সন সংক্রান্ত সম্রাটের নির্দেশনামা জারি হয় ১০ মার্চ ১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে। তা কার্যকরি দেখানো হয়েছিল ১১ মার্চ ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহণের বছর থেকে।
বাংলা সনের ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণ মাটির সঙ্গে এর সংশ্লিষ্টতা। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের প্রধান উপজীবিকা কৃষি এবং আমরা যারা শহরে বাস করি তাদের অধিকাংশের শেকড় গ্রামে কৃষিকাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। গ্রামে নববর্ষ উদযাপন হয় মহা সমারোহে। প্রকৃতির নবরূপ একদিকে অন্যদিকে নতুন বছরের শুভ সূচনায় ‘হালখাতা খোলার’ আড়ম্বর। বারোয়ারি মেলা শুরু হয় চৈত্র সংক্রান্তি থেকেই। নববর্ষের প্রারম্ভ শহরে পান্তাভাত দিয়ে এখন শুরু হলেও ছোটবেলায় গ্রামে দেখেছি নানারকম ভেষজ রস মিলিয়ে তেতো এক তরল পদার্থ পান করার মধ্য দিয়ে দিনটি শুরু হতো। খালি পেটে ফুল বাবু সেজে শহুরে পান্তা খেয়ে অর্থ এবং শরীরনাশ দুটোরই সম্ভাবনা থাকে কিন্তু খালি পেটে নিম-নিশিন্দা কিংবা চিরতার পানি অধিক স্বাস্থ্যপ্রদায়ী। পান্তা ভাত খাওয়ার মাঝে ঐতিহ্য রক্ষার যে চেষ্টা তাতে আমাদের খেটে খাওয়া মানুষদের স্মরণ করার প্রচেষ্টা বলে মনে হয়। আগেই বলেছি নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস সুপ্রাচীন। প্রাচীন উৎসবের মধ্যে পুণ্যাহ, হা-ডু-ডু, বলী খেলা, হালখাতা খোলা ইত্যাদি যুক্ত হয়ে আছে। এগুলো সবই আমাদের লোকজ ঐতিহ্য। হাজার বছর ধরে গ্রাম-বাংলার মানুষ এ ঐতিহ্য ধারণ করে আছে মনে-প্রাণে।
নববর্ষ পালন করে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ সবাই। এ দিনটির শুভ সূচনা হয় নারীর কল্যাণ হাতের আল্পনায়; ঘরের দরোজায় আম্রপাতা সংযুক্ত মঙ্গলঘট, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঘরদোরের মধ্য দিয়ে। চিড়ে দই গুড় ফল দিয়ে প্রাতরাশ। দুপুরে সুক্তো, নানা প্রকার শাক, সজনে ডাটা, কাঁচা আম দিয়ে রান্না করা ডাল সহযোগে ভাত খেয়ে নতুন কাপড় পরে বাবার হাত ধরে সন্তানদের মেলায় গমন। মুড়ি মুড়কি বিন্নি ধানের খই রঙিন গামছায় বেঁধে ভেঁপু বাজাতে বাজাতে সন্ধ্যায় গৃহে প্রত্যাবর্তন। এই আমাদের পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্য। এই আনন্দ এই অনুভূতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার জন্য শহরেও পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়।
নববর্ষ উদযাপনকে হিন্দুয়ানি ধারা বলে কোণঠাসা করা যাবে না। সংস্কৃতির বিকাশে ধর্মীয় উপাদান যেটুকু আসে তা একেবারে ভেতর থেকে মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে আত্মীভূত হয়ে আসে। আরোপিত হয়ে এলে তা নানা বিপর্যয় ঘটায়। ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক না করলে ধর্ম আর ধর্ম থাকে না ব্যবসায়ে পরিণত হয়। অনুষ্ঠানমূলক সামাজিক ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ব্যবহার করলে জাতির প্রগতির পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের স্বপ্ন ও সংগ্রামের তৎকালীন পূর্ব বাংলার সচেতন বুদ্ধিজীবী, ছাত্র সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিশেষ করে বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ আদর্শেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু বাঙালির সংস্কৃতি, মনন, বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ, গ্রামীণ লোকায়ত ও মানবিক চিন্তা চেতনার সঙ্গে বাস্তব যোগ না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা হয়েও জিয়াউর রহমান মূলধারা থেকে সরে গিয়ে বাংলাদেশকে সম্ভাবনাহীন নিষ্ফলা ও শেকড়চ্যুত করার উদ্যোগ নেন। তার অনুসারীদের ধারণা, মানুষের তথা প্রাণীর জন্মের মতো ঐতিহ্যকেও বোধ হয় একটি নির্দিষ্ট সময়ে জন্ম দেওয়া যায়। তাদের মতে বাংলাদেশের কোনো অতীত নেই, আর থাকলেও তা পুরোপুরি অগ্রাহ্য করতে হবে। বাংলাদেশের যেদিন জন্ম, সংস্কৃতিরও সেদিন জন্ম। এ কথা একমাত্র বর্বরের পক্ষেই বলা সম্ভব। যদিও এদের সংখ্যা যে খুব কম তা কিন্তু নয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর থেকে এদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালি মুসলমানদের মাঝে বাংলা নববর্ষের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়। ১৯৫০-এর দশক থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধারার সূচনা হয়। তার একটি মৌলিক উপাদান হিসেবে নাগরিক মধ্যবিত্ত বাঙালি বিশেষ করে নব্য মুসলিম মধ্যবিত্ত বাঙালি বর্ষবরণ উৎসব শুরু করে। বাঙালি সংস্কৃতির এই নতুন বিন্যাস ও বিকাশকে হিন্দুয়ানি বলে আখ্যায়িত করা হয়, বাংলা নববর্ষের সঙ্গে নানা আঞ্চলিক আচার অনুষ্ঠান ও এদেশের আদিম জনগোষ্ঠীর উৎসব, ব্রত, কামনা প্রভৃতি যুক্ত থাকায় এবং তিথি নক্ষত্র শুভাশুভ সম্পর্কের জন্য একে হিন্দুদের সন বলে চিহ্নিত করা হয় এবং এও বলা হয় বাংলা সাল পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আদর্শের পরিপন্থী। মজার ব্যাপার হলো মুসলমান সম্রাট বাংলা সন প্রচলন করেন এবং মধ্যযুগে এই সব আচার অনুষ্ঠান, পালা পার্বণ ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকে মুসলমান সুলতানগণ বাধাগ্রস্ত তো করেনইনি বরং উৎসাহিত করেছেন। জলবায়ু আবহাওয়া এবং পরিবেশের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তৈরি করা যায় না। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ করে বাঙালি তার নিজস্বতা স্বকীয়তা নিয়েই নতুন রাষ্ট্র গঠন করেছে।
স্বাধীনতার পর নব উদ্যমে নববর্ষ উদযাপন করা হয়। ব্যর্থ প্রাণের আবর্জন পুড়িয়ে দিয়ে শুভ সূচনা করা হয়। কিন্তু স্বাধীনতার বিরুদ্ধ-শক্তি হাতগুটিয়ে বসে থাকেনি। সুযোগের অপেক্ষায় ছিল কখন থাবা বিস্তার করা যায়। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে দেশকে আবার পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সংস্কৃতির মাঝে সুকৌশলে অপসংস্কৃতির বিষ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চাকে তারা ব্যহত করে প্রতি পদক্ষেপে। আজ যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি ক্ষমতায় তখনও তারা সরকারকে বিব্রত করতে নানা অপকর্ম চালাচ্ছে। ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে কিংবা উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা সংস্কৃতি ধ্বংসের পায়তারা। এ সব ঘৃণ্য কাজে যারা জড়িত তারা জাতির শত্রু, সংস্কৃতির শত্রু, দেশের শত্রু।
বাংলা নববর্ষে ১৪৩০-এর এই শুভ লগ্নে আমাদের অঙ্গীকার হোক যা কিছু অসুস্থ, অসুন্দর, অপসংস্কৃতি তা বর্জন করে সুস্থ, সুন্দর সংস্কৃতি ও সৃজনশীল জীবন যাপন করি।