বীরাঙ্গনা, ‘বিশ্বসুন্দরী’ এবং আমাদের চলচ্চিত্রে মহামারী

ওমর শরীফ
Published : 27 Dec 2020, 00:09 AM
Updated : 27 Dec 2020, 00:09 AM

কথায় বলে মানুষ অভ্যাসের দাস। সেই হিসেবে যাকে যেভাবে দেখতে অভ্যস্ত সেটার বাইরে গিয়ে দেখতে হলেও কিছুটা হয়ত অস্বস্তি কাজ করে মনে। হিরো আলমকে যদি এই সূত্রে বাঁধা হয় তবে হয়ত সমীকরণটা খুব একটা ভুল হবে না।

এ যুগে ছোট পর্দা থেকে সরে এসে মানুষ হাতের তালুতে ধরা ফোনের পর্দায় বিনোদন দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই ফোনের পর্দায় 'হিট' খাওয়া মানুষগুলো যখন বড় পর্দায় কাজ করেন তখন একটু হলেও দ্বিধা কাজ করে, পকেটের টাকা খরচ করে কী জন্য যাব বড় পর্দায় তাদের দেখতে! 'সাহসী হিরো আলম' ছবিটি হয়ত এই কারণেই দর্শকরা সেভাবে দেখতে যায়নি।

হতে পারে, হিরো আলমের 'কমেডি' দেখতে পয়সা খরচের কী দরকার- এরকম একটা মনোভাব।

একইভাবে ছোট পর্দার পরিচালক যখন বড় পর্দার জন্য সিনেমা বানাতে যান, তখনও দর্শকদের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করে। অন্তত আমার করে। আর সেটা হল, ছোট পর্দায় যা দেখছি সেটাই যদি টিকেট কেটে বড় পর্দায় দেখতে হয় তাহলে আর শুধু শুধু রাজধানীর জ্যাম ঠেলে সিনেমা হলে যাওয়ার কি দরকার।

পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী, টেলিভিশন নাটক নির্মাণ করে আসছেন বহুদিন ধরে। তার নাটকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, কাহিনী যাই হোক তা বেশিরভাগই প্রেমের আর ঝকঝকে উপস্থাপনার মাধ্যমে দর্শকদের চোখে ঝিলিক দেওয়ার চেষ্টা। বড় পর্দাতেও কি সেভাবে চমক দিতে চেয়েছেন তিনি?

অন্যান্য দর্শকরা যাই বলুক, চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় তার প্রথম চলচ্চিত্র 'বিশ্বসুন্দরী'র চিত্রায়নে ঝকঝকে ভাবের কোনো অভাব হয়নি। তবে যদি বলা হয় চমক ছিল কি-না, সেক্ষেত্রে কিছুটা হতাশ হতেই হবে।

আর তরুণ লেখক রুম্মান রশিদ খান 'বিশ্বসুন্দরী' সিনেমায় বারবার চমক দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বটে, তবে সেগুলো ছিল সাধারণ মানের। ছবি দেখার সময়ে সহজেই আন্দাজ হয়ে যায় এরপর কী হতে পারে।

ছবির কাহিনী এগিয়েছে একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নারী আর তার ছেলেকে ঘিরে। যে চরিত্র দুইটিতে অভিনয় করেছেন চম্পা ও সিয়াম।

সিয়াম অর্থাৎ সিনেমায় যার নাম স্বাধীন, তার এক তিক্ত পূর্ব অভিজ্ঞতার কারণে কোনো সুন্দরী নারীকে সে পছন্দ করে না। তার ধারণা- সুন্দর মেয়ের মন অসুন্দর হয়। আর এই কারণে সে বিয়েও করে না। কিন্তু তার মা উঠেপড়ে লেগেছেন তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য। একারণে তিনি তার বান্ধবী ও তার মেয়ের সাহায্য চেয়ে বসেন।

আর এই বান্ধবী চরিত্রে অভিনয় করেছেন মনিরা মিঠু ও মেয়ের চরিত্রে পরীমনি। পরীমনি ওরফে সিনেমার চরিত্রে যার নাম শোভা সে আবার বিদেশ ফেরত, স্থাপত্যকলায় উচ্চতর শিক্ষা লাভ করে দেশে ফিরেছেন। তার ইচ্ছে দেশেই স্থাপত্যশিল্পে বিশেষ কিছু করে বসবেন।

অথচ মা আর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী চম্পার অনুরোধে সেই ইচ্ছের জলাঞ্জলি দিয়ে শোভা নেমে পড়েন স্বাধীনকে পটকান দিতে। নিজেই অসুন্দর সেজে স্বাধীনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। স্বাধীনও এক পর্যায়ে প্রেমে পড়ে তার।

এভাবেই এগিয়েছে বিরতির আগ পর্যন্ত। সিনেমার প্রথম অংশের দৃশ্যধারণ ছিল আসলেই চমৎকার। কক্সবাজার, বান্দরবান কিংবা নীলগিরির দৃশ্যগুলো চয়নিকা চৌধুরী দৃষ্টি নন্দনভাবেই ফুটিয়েছেন। তবে টিভি পরিচালক হিসেবে তার একটা অপবাদও রয়েছে। তিনি নাকি ক্যামেরা-ম্যান নির্ভর পরিচালক।

যাই হোক, দৃশ্যায়ন যত সুন্দরই হোক খটকা কিছুটা লেগেই যায়। যেমন ছবির শুরুতে সিয়ামের গানের চিত্রায়ণ সুন্দর হলেও কোরিওগ্রাফি মোটেও ভালো ছিল না। নায়কের পেছনে সহ-নৃত্যশিল্পীদের হাত-পা নাড়ার মধ্যে ছিল ছন্দপতন। যেগুলোতে পরিচালকের আরও যত্ন নেওয়া উচিত ছিল। আবার নীলগিরিতে সিয়াম আর পরীমনি ছাড়া আর কোনো পর্যটক দেখা যায়নি। দেখে মনে হয়েছে, তাদের প্রেম করার জন্য সবাই জায়গা ছেড়ে দিয়ে চলে গেছেন।

বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে এই সাধারণ জিনিসটা কখনও ফুটিয়ে তোলা হয় না। হলিউড বা অন্যান্য দেশের ছবিতে যখন কোনো পাবলিক প্লেসের দৃশ্য দেখানো হয় তখন আশপাশে সাধারণ মানুষদেরও দেখা যায়। ফলে দেখতে স্বাভাবিক লাগে। নীলগিরির দৃশ্যায়নে পরিচালক এই ব্যাপারে উন্নাসিক ছিলেন।

যা হোক, এরপর ছবির দ্বিতীয় অংশ শুরু। অর্থাৎ বিরতির পর দেখা যায় স্বাধীন ও শোভা ঢাকায় ফিরে একজন আরেকজনের প্রতি আকর্ষণ বোধ করতে থাকে। এক পর্যায় স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয় সে শোভাকে তার মনের কথা বলবে। বলেও.. শোভাও রাজি হয়। শুরু হয় বৃষ্টিভেজা গানের দৃশ্য- যা কিনা বাংলা চলচ্চিত্রের চিরায়ত এক দৃশ্য। এখান থেকেও বের হতে পারেননি পরিচালক।

তবে একটা আক্ষেপ মুছে গেছে আমার। অন্যান্য ছবিতে বৃষ্টিতে ভিজলেও নায়িকার মেইকআপ ধুয়ে যায় না। আর এখানে দেখা গেল বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গেছে শোভার অসুন্দর সাজার মেইকআপ। ফলে স্বাধীনের কাছে প্রকাশ পেয়ে যায় তার আসল রূপ। তাকে ঠাকানো হয়েছে বলে মনে করে স্বাধীন প্রত্যাখ্যান করে শোভাকে।

স্বাধীনের মা আর তার বান্ধবী সব জানতে পারে। ফলে তারা তখন ব্যস্ত হয়ে যায় ছেলে আর মেয়ের মিলন ঘটাতে।

ওদিকে শোভার বাবা ছোটবেলা থেকে কষ্টে মানুষ হয়েও এখন বিশিষ্ট বড়লোক। তাই মেয়েকে বিশিষ্ট কোনো বড়লোকের ছেলের হাতেই তুলে দিতে চান। আর এখানেই আবির্ভাব ঘটে অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবুর।

শোভার বাবার চরিত্রে বাবুকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা একেবারেই বেমানান। এক্ষেত্রে পরিচালক আর চিত্রনাট্যকার পুরোপুরি ফেল মেরেছেন।

বাবুর মতো অভিনেতার কাছ থেকে পরিচালক যেমন কাজ আদায় করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন তেমনি মেয়ের দিকে তাকিয়ে বাবুর মুখের সংলাপ 'আম্মু উউউউ.. তোমারে তো নায়িকার মতো লাগতাছে', বা মেয়ের দিকে তাকিয়ে গান গেয়ে ওঠা 'চেনা চেনা লাগে তবু অচেনা' শুনে হঠাৎ মনে হয়েছে তিনি শোভার বাবা না, বরং গ্রাম্য কোনো দুষ্টু মাতব্বর, গ্রামের একমাত্র উঠতি যৌবনা নায়িকাকে দেখে তিনি 'ইভটিজ' করছেন। সত্যি বলতে এই সংলাপগুলো একই সঙ্গে ছিল বিরক্তির ও অপ্রয়োজনীয়।

এদিকে শোভা-স্বাধীনের মনের মিলন ঘটে। তবে ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। কারণ ফজলুর রহমান বাবু নিজের পছন্দের ছেলের হাতে মেয়েকে তুলে দেবেন। আর এখানেই শুরু হয় দ্বন্দ্ব। স্বাধীনকে ভালো লাগলেও বাবা হিসেবে শোভাকে বিয়ে দিতে চান এক ব্যবসায়ীর ছোট ভাইয়ের হাতে, যার নাম জ্যাকি।

আর জ্যাকি ভাইকে যতবারই দৃশ্যে দেখা গেছে, ততবারই তিনি হয় 'ওয়েট লিফটিং' করছেন নয়তো ট্রেডমিলে দৌড়াচ্ছেন। যাহোক সিনেমায় ভিলেনের দরকার ছিল। জ্যাকিকে দিয়ে তা পূরণ করা হল।

তবে তার ভাইয়ের চরিত্রে একবার মাত্র দেখা গেল অভিনেতা ঝুনা চৌধুরীকে। পুরো ছবিতে তার আর কোনো পাত্তা নেই। ফলে তাকে ওইটুকু দৃশ্যের জন্য আনার কোনো মানে ছিল না।

যা হোক, ছবির এই পর্যায়ে এসে মানব প্রেমের মধ্যে মেশানো হল দেশপ্রেম, স্বাধীনতার যুদ্ধ আর বীরাঙ্গনা'র মিক্সার।

গল্পকার এখানেই বার বার চমক দিতে চেয়েছেন। আসলে স্বাধীনের মা একজন বীরাঙ্গনা, যা তিনি কোনোকালেই প্রকাশ করেননি। আর স্বাধীন তার নিজের ছেলেও নয়।

শোভার বাবার ভাষায়, 'পাপের বিজ' স্বাধীন যখন এই বিষয়টা শোভার বাবার কাছ থেকেই জানতে পারে তখন তার আর মাথা ঠিক থাকে না। মায়ের সঙ্গে তুমুল কাণ্ড ঘটিয়ে বের হয়ে যায় বাসা থেকে। আর মা, সেই আক্ষেপে টিভি চ্যানেলে চলে যান সাক্ষাৎকার দিতে যেখানে তিনি তার বীরাঙ্গনার পরিচয়টা প্রকাশ করে দেন।

আর সেই সাক্ষাৎকার দেখে শোভার বাবার ভুল ভাঙে। তিনি জানতে পারেন মুক্তিযুদ্ধের সময় ফজলুর রহমান বাবুর বাবা অর্থাৎ শোভার দাদা-ই মুক্তিযুদ্ধের সময় চম্পাকে উদ্ধার করেছিলেন।

সবকিছু ফেলে স্বাধীনকে মারধোর দেওয়ার জন্য লেলিয়ে দেওয়া জ্যাকিকে আটকাতে তিনি রওনা দেন। আটকাতে পারেনও। তারপর আর কি… মেয়ের বাবা-মা, স্বাধীন-শোভা মিলে চলে যান বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দেওয়া হচ্ছিল এরকম একটি অনুষ্ঠানে। আর সেখানে গিয়ে মা-ছেলের শান্তির মিলন ঘটে।

ছেলে স্বাধীন, মঞ্চে দাঁড়িয়ে সবার সামনে বলেন, "আসল সৌন্দর্য মুখে নয় মনের ভেতরেই আসল সৌন্দর্য, আর বীরাঙ্গনারাই আসল 'বিশ্বসুন্দরী'।" আর এখানেই আমার কাছে মনে হয়েছে ব্যাপারটা যথেষ্ট খেলো করে ফেলেছেন পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার।

সত্যি বলতে শেষ দৃশ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মধ্যে যেভাবে বীরাঙ্গনার বিষয়টা তুলে ধরা হয়েছে সেটা অতি নাটকীয়তা মনে হয়েছে। সেই সঙ্গে অবাস্তব লেগেছে।

মানুষ গল্পে কল্পকাহিনী মেনে নেয়। তবে বাস্তবতার ভিত্তিতে যেসব গল্প থাকে সেগুলোর সঙ্গে যদি কল্প-বাস্তবতার মিল না ঘটে তবে মনে খচখচানি থেকেই যায়। এক্ষেত্রে বলা যেতে 'স্পাইডার-ম্যান' এর কথা।

একটা মাকড়সার কামড় খেয়ে একজন মানুষ কখনই সুপার পাওয়ারের অধিকারী হতে পারে না। তারপরও আমরা সেই গল্প মেনে নেই সেই ছবিতে থাকা পাত্র-পাত্রীদের সাবলিল অভিনয়, মধ্যবিত্ত ছেলের জীবন সংগ্রাম, প্রেমিকাকে সময় না দেওয়া বা বেকারত্বের মতো বিষয়গুলো নিজেদের জীবনের সঙ্গে মিলে যায় বলে।

'বিশ্বসুন্দরী' ছবিটি এই জায়গাতেই হোঁচট খায় বারবার। বড়লোক, ধনী পরিবারের দুই ছেলে-মেয়েকে উপস্থাপন, মা-ছেলের সংঘাতে অতিনাটকীতা। আর শেষ দৃশ্যে বিশাল করে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঘোষণা দিয়ে বীরাঙ্গনা মাকে 'বিশ্বসুন্দরী' বলে আখ্যা দেওয়ার মতো স্থূল বুদ্ধিটা না করে বরং আরও পারিবারিকভাবে করতে পারলে হয়ত সঠিক আবেগটা প্রকাশ পেত।

তাছাড়া এই যুগের কোনো উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে একটি অপরিচিত উড়নচণ্ডি ছেলের মানসিকা পরিবর্তনের জন্য মুখে ব্রণের দাগের মেইকআপ করে মন গলানোর জন্য উঠেপড়ে লাগবে- সেটাও অতি কাল্পনিক।

সত্যি বলতে একটা সাধারণ মানের মৌলক গল্প 'বিশ্বসুন্দরী'। যেখানে গল্পের 'টুইস্ট' যতই থাকুক, বিষয়বস্তু খুবই পুরানো। অসুন্দরের মাঝেই আসল সুন্দর লুকিয়ে থাকা নিয়ে কম ছবি হয়নি, 'বিউটি অ্যান্ড দি বিস্ট' গল্প নিয়ে বিভিন্ন সময়েই নানান ছবি হয়েছে।

আবার মুক্তিযুদ্ধ বা বীরাঙ্গনার মতো বিষয়গুলো ঠিক খাপ খায়নি এক্ষেত্রে বলেই মনে হয়েছে। সংলাপও ছিল দুর্বল।

যেমন- স্বাধীনের প্রাক্তন প্রেমিকার নাম ইমা। তাকে একবার স্বাধীনকে বলতে শোনা যায়, "বিয়ের পর কোনো মা নয়, অনলি ইমা।"

সংলাপ শুনেই মনে হয়েছে চরিত্রে 'ইমা' নামটাই রাখা হয়েছে এই ডায়লগটা বলানোর জন্য।

সত্যি বলতে রুম্মান রশিদ খানকে চলচ্চিত্রের সংলাপ ও চিত্রনাট্য লেখার জন্য আরও পোক্ত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। নামকরা কোনো প্রতিষ্ঠানের বিশেষ পদে থাকলেই যে সংলাপ চিত্রনাট্য ভালো লিখবেন কেউ, সেটার কোনো মানে নেই।

স্বাধীনের মায়ের চরিত্রে চম্পার অভিনয় ছিল সেকেলে আমলের স্টাইলে। একটু বেশি আবেগীয়। যা হয়ত এখনকার দর্শকরা দেখতে আর অভ্যস্ত নয়। অবশ্য তার অভিনয় নিয়ে তো নতুন করে বলার কিছু নেই। গুণী অভিনেত্রী তিনি।

তবে ছবির প্রথমদিকে তার 'এন্ট্রি'র সময় পরিচালক কেনো স্লোমোশনে তাকে দেখালো সেটাই বোধগোম্য হলনা। ব্যাপারটা বেশি নাটকীয় করতে গিয়ে খেলো হয়ে গেছে বেশি।

এছাড়া যাত্রাপালার বিবেকের মতো মাঝে মাঝেই উদয় হয়েছেন চিত্রনায়ক আলমগীর। সত্যি বলতে তার চরিত্রটাও সেভাবে জোরালো ভাবে ফোটাতে পারেননি পরিচালক। সংলাপ আরও জোরালো হওয়ার প্রয়োজন ছিল।

মহামারীর পরিস্থিতির কারণে যেখানে বিনোদন মাধ্যম প্রায় মুখ থুবড়ে পড়ছিল, সেখানে সিনেমা হল খোলার পর 'বড় বাজেট' এর বাংলা ছবি হিসেবে প্রথম মুক্তি পাওয়া 'বিশ্বসুন্দরী' সিনেমা নিয়ে আমাদের আশার আলো ছিল অনেক। তবে সেই আলো অতটা উজ্জ্বল হয়ে জ্বলেনি।

আমি যেদিন ছবিটি দেখলাম সেদিন শনিবার সন্ধ্যা। ছুটির দিন হলেও ধানমণ্ডি দুইয়ের সীমান্ত সম্ভারের স্টার সিনেপ্লেক্সের সেই হলে ছিল হাতে গোনা ১০-১৫ জন দর্শক। তাও আবার বিরতির সময় সাত-আট জন দর্শক উঠে চলে গেলেন। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়ত প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে গেছেন। তবে বিরতির পর সিনেমা শুরু হলেও তাদের আর ফিরতে দেখা যায়নি।

সত্যি বলতে দেশের সিনেমা শিল্পকে এই মহামারীর কালে বাঁচাতে হলে আরও ভালো মানের ছবি নির্মাণ জরুরি। এক্ষেত্রে বিশাল বাজেটে অতি গ্ল্যামারাস কিছু করার দরকার নাও পড়তে পারে। বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য চাই ভালো মানের গল্প এবং অতিনাটকীয়তা বিবর্জিত সাবলিল অভিনয় ও পরিচালনা।